হজরত ইবরাহিম (আ.) জাতিকে তওহিদের দাওয়াত দিয়েছেন। তার বাবাকে তওহিদের প্রতি আহ্বান করেছেন, মূর্তি ভেঙেছেন। শাসক নমরুদ ইবরাহিম (আ.)-এর সঙ্গে বিতর্ক হয়। ইবরাহিম (আ) বলেন, আমার আল্লাহ তিনি, যিনি জীবন-মৃত্যু দান করেন। তখন নমরুদ বলল, আমিও তো জীবন ও মৃত্যু দান করি। এ বলে সে দুজন জীবন্ত লোক আনতে বলল। একজনকে মেরে ফেলল অন্যজনকে ছেড়ে দিল। আর বলল এই যে আমি যাকে ইচ্ছা জীবন ও মৃত্যু দিই। তারপর ইবরাহিম (আ.) সূর্য উদয় ও অস্তের কথা বললেন, তখন নমরুদ কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেল।
আল্লাহ তাঁর ক্ষমতা দেখানোর ইচ্ছা করলেন। গাধাসহ এক লোককে মৃত্যু দিয়ে একশত বছর মৃত রাখেন। তার সঙ্গে রাখা খাবার নষ্ট করলেন না। এক শ বছর পর জীবিত করে বললেন, ‘তুমি এ অবস্থায় কত দিন ছিলে?’লোকটি বলল, ‘এক দিন অথবা এক দিনের কিছু সময়। পুনরায় যখন জীবিত হলো তখন সূর্য অস্ত যাচ্ছিল। লোকটি ভাবল হয়তো দিনের মধ্যবর্তী সময়টুকু মৃত অবস্থায় ছিলাম। আল্লাহ জানিয়ে দিলেন, তুমি এক শ বছর মৃত ছিলে এবং আল্লাহ নিদর্শনগুলোও দেখিয়ে দিলেন। আল্লাহ সব বিষয়ে ক্ষমতাবান, তিনি ইচ্ছা করলে হাজার বছর পরেও মৃতকে জীবিত করতে পারেন, মানুষ মরে পচে গলে গেলেও পুনর্জীবিত করা তাঁর পক্ষে অসম্ভব নয়। এ লোকটি কে ছিল, তা নিয়ে অনেক বর্ণনা পাওয়া যায়। তার নাম ছিল উজায়ের, তবে প্রকৃত নাম আল্লাহ ভালো জানেন। (সূত্র: তফসিরে ফাতহুল মজিদ)
কোরআনে আছে, আবার সেই ব্যক্তির কথা স্মরণ করো, যে এমন এক শহরে পৌঁছেছিল যা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল। সে বলল, ‘মৃত্যুর পর কী রূপে আল্লাহ একে জীবিত করবেন?’ তখন তাকে আল্লাহ এক শ বছর মৃত রাখলেন, তারপর তাঁকে পুনর্জীবিত করলেন। আল্লাহ বললেন, ‘তুমি মৃত (অবস্থা) কতক্ষণ ছিলে?’ সে বলল, ‘এক দিন বা এক দিনেরও কিছু কম।’ তিনি বললেন, ‘না, এক শ বছর ছিলে। আর লক্ষ করো তোমার খাদ্যসামগ্রী ও পানীয় বস্তু আর তোমার গাধাটাকে—ওসব অবিকৃত রয়েছে আর আমি তোমাকে মানবজাতির জন্য নিদর্শনস্বরূপ করব। আর (গাধার) হাড়গুলোর দিকে লক্ষ করো, কীভাবে সেগুলোকে আমি জোড়া দিই ও মাংস দিয়ে ঢেকে দিই।’ যখন এ তার কাছে স্পষ্ট হলো তখন সে বলে উঠল, ‘আমি জানি, আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২৫৯ )