যিশুখ্রিষ্টের মহা আবির্ভাব
আজ ২৫ ডিসেম্বর। মহান যিশুর জন্মের পবিত্র ক্ষণকে স্মরণ করতেই পৃথিবীজুড়ে বড়দিন উদ্যাপিত হচ্ছে। বেথলেহেমের এক গোয়ালঘরে জন্ম হয়েছিল যিশুর, পরবর্তীকালে তিনিই ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন। হিংসা-বিদ্বেষ, পাপ-পঙ্কিলতার বদলে মানুষকে ভালোবাসা, করুণা, পবিত্রতা ও সুন্দরের পথ দেখিয়েছেন তিনি। মানুষকে সন্ধান দিয়েছেন মুক্তির। তাঁর অনুসারী কোটি কোটি মানুষ তাঁরই বন্দনা গাইবে আজ।
খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুর জন্মোৎসব গোটা বিশ্বে নানা মত-জাতিধর্ম–নির্বিশেষে উদ্যাপিত হয়। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে পশ্চিমা দেশগুলোতে বাজার সরগরম হয়ে ওঠে, লম্বা ছুটি নিয়ে মানুষ ঘুরতে বেরিয়ে যায়। পরিবারের সঙ্গে মিলিত হয় দীর্ঘদিন পর। যিশু যে মানবিক আদর্শের বাণী প্রচার করেছেন, জাতিধর্ম–নির্বিশেষে সবার জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। মানবতার সংকটপূর্ণ মুহূর্তে তা যেন আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
বড়দিন বা ক্রিসমাস যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব-অনুষ্ঠান। ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে উদ্ভূত হলেও বর্তমানে এটি বিশ্বব্যাপী প্রায় ধর্মনিরপেক্ষ একটি উৎসবে পরিণত হয়েছে। ফাদার ক্রিসমাস বা সান্তা ক্লজ, ক্রিসমাস কার্ড, ক্রিসমাস ট্রি এসবও ক্রিসমাস বা বড়দিন উৎসবের অঙ্গ।
ক্রিসমাসে যিনি শিশুদের জন্য উপহার বয়ে নিয়ে আসেন, পৃথিবীর নানা দেশে তাঁকে নানা নামে ডাকা হয়। যেমন ফাদার ক্রিসমাস, সান্তা ক্লজ, সেন্ট নিকোলাস প্রভৃতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইংল্যান্ডে সাধারণত ক্রিসমাসের আগের দিন সন্ধ্যায় শিশুরা মোজা ঝুলিয়ে রাখে, যাতে সান্তা ক্লজ রাতের বেলায় এগুলো উপহার দিয়ে ভরে দিতে পারেন। ক্রিসমাস ট্রির তলায়ও উপহার রেখে দেওয়া হয়।
ফ্রান্স, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলে শিশুরা উপহার পায় তাদের জুতার ভেতর থেকে। এ জুতাগুলো তারা আগের দিন সন্ধ্যায় ঘরের দরজার বাইরে রেখে দেয়। ক্রিসমাস কার্ডের প্রচলন শুরু হয় ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি। আর ক্রিসমাস বৃক্ষ হলো সাধারণত মোচাকৃতির বৃক্ষ, যাকে ছোট ছোট বৈদ্যুতিক বাল্ব এবং বিভিন্ন উপহারসামগ্রী দিয়ে সাজানো হয়। কখনো গাছের ওপর স্থাপন করা হয় একজন দেবদূত ও একটি তারা। এর মাধ্যমে যিশুর শিশুকালের দৃশ্য দেখায়, যেমন গোয়ালঘরে
পশুকে খড় খাওয়ানোর গামলায় শিশু যিশু এবং তাঁর পাশে মা মেরি ও যোসেফকে দণ্ডায়মান দেখানো হয়।