১০ কাউন্সিলর মনোনয়নপ্রত্যাশী

উপরের বাম দিক থেকে জামাল মোস্তফা ,আবু আহমেদ মন্নাফী ,হুমায়ুন কবির ,কাজী হাবিবুর রহমান ,হাসিবুর রহমান ,আনিসুর রহমান ,মোহাম্মদ নূর হোসেন ,শহিদ উল্লাহ ,রফিকুল ইসলাম ,মকবুল ইসলাম খান
উপরের বাম দিক থেকে জামাল মোস্তফা ,আবু আহমেদ মন্নাফী ,হুমায়ুন কবির ,কাজী হাবিবুর রহমান ,হাসিবুর রহমান ,আনিসুর রহমান ,মোহাম্মদ নূর হোসেন ,শহিদ উল্লাহ ,রফিকুল ইসলাম ,মকবুল ইসলাম খান

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দৌড়ে ঢাকার উভয় সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররাও শামিল হয়েছেন। এবার অন্তত ১০ জন কাউন্সিলর মনোনয়ন চেয়ে নিজ নিজ দলের কাছে আবেদন করছেন। এঁদের মধ্যে কেউ কেউ প্রার্থী হিসেবে বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং মনোনয়ন পেতেও পারেন বলে আলোচনা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নয়জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছেন ছয়জন, তিনজন বিএনপি থেকে। ডিএসসিসির তুলনায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) মনোনয়নপ্রত্যাশী কম। এখানে একজন কাউন্সিলরই মনোনয়ন চেয়েছেন, তিনি আওয়ামী লীগের।

ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সাংসদ পদে দলীয় মনোনয়ন চাওয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার অনেক ভোটার। এই কাউন্সিলররা নিজ নিজ দলের তৃণমূলের কর্মীদের নির্বাচনী আমেজে মাতিয়ে রেখেছেন। প্রতিদিন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের দপ্তর, দলীয় কার্যালয় ও পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানে নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা চলছে।

ডিএসসিসি

ঢাকা-৪ আসনে (থানা-শ্যামপুর ও কদমতলী। ওয়ার্ড ৪৭ এবং ৫১ থেকে ৫৪, ৫৮ ও ৫৯ নম্বর) আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় সমর্থন চাইছেন ডিএসসিসির দুই ওয়ার্ড কাউন্সিলর। তাঁরা হলে ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী হাবিবুর রহমান ও ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ নূর হোসেন। তাঁদের মধ্যে কাজী হাবিবুর রহমান শ্যামপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকা-৪ আসনের তৃণমূল ও জনসাধারণের সমর্থন নিয়ে আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। গতকাল সন্ধ্যায় শ্যামপুর, কদমতলী থানা এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড, ইউনিট আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের নিয়ে উঠান বৈঠক করেছি। তাঁরা সবাই আমাকে সমর্থন দিয়েছেন।’

ঢাকা-৫ আসনে (থানা—যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা। ওয়ার্ড ৪৮ থেকে ৫০ এবং ৬০ থেকে ৬৬ ও ৭০ নম্বর) ডিএসসিসির ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাদল সরদার বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে জানিয়েছে দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটি। তবে গতকাল তাঁর মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

ঢাকা-৬ আসনে (থানা—সূত্রাপুর, ওয়ারী, গেন্ডারিয়া ও কোতোয়ালি। ওয়ার্ড ৩৪ এবং ৩৭ থেকে ৪৬ নম্বর) আওয়ামী লীগের সমর্থন চাইছেন ডিএসসিসির ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু আহমেদ মন্নাফী। তিনি দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি। মন্নাফী বলেন, ‘এ আসনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন করেছেন। আসনটিতে দলের একটি ঐতিহ্য আছে। আমি নিজে দীর্ঘদিন ধরে বৃহত্তর সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছি। তাই দলের তৃণমূলের সমর্থন নিয়ে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী।’

এ আসেনই আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদ উল্লাহ। তিনি আওয়ামী লীগের গেন্ডারিয়া থানার সভাপতি। এ ছাড়া বিএনপি থেকে এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ৪০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মকবুল ইসলাম খান। তিনি বিএনপির গেন্ডারিয়া থানা কমিটির সভাপতি।

পুরান ঢাকার ফরাশগঞ্জ এলাকা ঢাকা-৬ আসনের আওতাধীন। গতকাল ফরাশগঞ্জ লেনে একটি চায়ের দোকানে স্থানীয় ভোটার আমজাদ হোসেন, তৈফিক আলম, ইউনুস মজুমদারের সঙ্গে কথা হয়। আলাপকালে তাঁরা বলেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলররা পরবর্তী সময়ে সাংসদ পদে নিজ দলের মনোনয়ন চাইবেন, এটাই স্বাভাবিক। যাঁর জনপ্রিয়তা আছে বা সমাজে যিনি ভালো কাজ করেছেন, তিনি মনোনয়ন পেলে বিজয়ী হবেন। নির্বাচনী এলাকার জন্য আরও বেশি কাজ করার সুযোগ পাবেন।

ঢাকা-৭ (থানা—লালবাগ, চকবাজার, বংশাল। ওয়ার্ড ২৩ থেকে ৩৬ নম্বর) আসনে ডিএসসিসির ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হুমায়ুন কবির দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। ১৯৯৪ সাল থেকে কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। বৃহত্তর লালবাগ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন টানা ২৪ বছর। গতকাল শনিবার হ‌ুমায়ুন কবির জানান, স্থানীয় রাজনীতিতে তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ আসনে নির্বাচনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে প্রচার চালাচ্ছেন। দল এবার তাঁকে যথাযথ মূল্যায়ন করবে বলে প্রত্যাশা তাঁর।

>এবার সংসদ নির্বাচনে ঢাকা মহানগরীর ৬ আসনে ডিএসসিসির ৯ ও ডিএনসিসির ১ কাউন্সিলর মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ৭ জন ও বিএনপির ৩ জন।

একই আসনে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ডিএসসিসির ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও এই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুর রহমান। তিনি প্রতিদিনই লালবাগ, চকবাজার ও বংশালের বিভিন্ন এলাকায় ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন। নৌকা প্রতীকে ভোট চাইছেন। তা ছাড়া বিএনপি থেকে এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ডিএসসিসির ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম। তিনি বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন।

ঢাকা-৯ আসনে (থানা—খিলগাঁ, সবুজবাগ ও মুগদা। ওয়ার্ড ১ থেকে ৭ এবং ৭১ থেকে ৭৫ নম্বর) আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ডিএসসিসির ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ আনিসুর রহমান। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। গতকাল আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতি শেষ করার পরপরই জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছি। তাই এবার সাংসদ পদে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি।’

ডিএনসিসি: ডিএসসিসির তুলনায় ডিএনসিসিতে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী কাউন্সিলরদের সংখ্যা একেবারেই কম। এর মধ্যে ঢাকা-১৫ (থানা—কাফরুল ও মিরপুর। ওয়ার্ড ৪, ১৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর) আসনে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ডিএনসিসির ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল মোস্তফা। তিনি এখন ডিএনসিসির ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্বও পালন করছেন। এর বাইরে ডিএনসিসির অন্য কোনো ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাংসদ পদে মনোনয়ন চাওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি।