হ্যাটট্রিক না আউট: সেই পরীক্ষায় মনিরুল
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রথম ভোটে মেয়র হয়েছিলেন তিনি। পরপর দুবার এ পদে জয়ী হয়ে তৃতীয়বারের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন সদ্য বিদায়ী মেয়র মনিরুল হক (সাক্কু)। তিনি জীবনে কোনো নির্বাচনেই হারেননি। আজ বুধবারের ভোট মনিরুলের জন্য বড় পরীক্ষা। জয়ী হলে হ্যাটট্রিক করবেন, হারলে জীবনে পরাজিত হওয়ার স্বাদ পাবেন। এ নির্বাচনে মনিরুল হকের প্রতীক টেবিল ঘড়ি।
মনিরুল হক ২০০৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা পৌরসভার চেয়ারম্যান পদে প্রথমবার নির্বাচনে অংশ নেন। ওই নির্বাচনে তিনি জয়ী হন। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে মনিরুল মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ৬৫ হাজার ৫৭৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আফজল খানকে তিনি ২৯ হাজার ১০৬ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র পদে দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ওই নির্বাচনে তিনি ৬৮ হাজার ৯৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানাকে ১১ হাজার ৮৫ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। মনিরুল হক প্রথম আরোকে বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। আমার ফুফাতো ভাই কর্নেল (অব.) আকবর হোসেন বীর প্রতীক কুমিল্লা-৬ (সদর) আসনে পাঁচবার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পাঁচবার জয়ী হন। আমি ওনার সব নির্বাচন করেছি।
১৯৭৯ সাল থেকে আমাদের পরিবার কোনো নির্বাচনে পরাজিত হয়নি। ২০০৫ সালে আকবর ভাই সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী থাকার সময় আমি পৌরসভার চেয়ারম্যান হই। এরপর দুবার মেয়র হয়েছি। এবারও সুষ্ঠু ভোট হলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’
মনিরুল হক বরাবরই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গত নির্বাচনে সেই দলের প্রতীক ধানের শীষ নিয়েই বিজয়ী হয়েছিলেন মেয়র পদে। তবে এবার নির্বাচনের আগে দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হওয়ায় গত মে মাসে তাঁকে আজীবনের জন্য বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়।
বিএনপি এবার এ সিটির নির্বাচন বর্জন করেছে। তারপরও নির্বাচন করা কেন, প্রথম আলোর সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে মনিরুল হক বলেছিলেন, ‘বিএনপি ২০১২ সালে কুমিল্লা সিটি নির্বাচন ও ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচন করলেও মাত্র সাতটি আসন পেয়েছে। যে দল তিনবার ক্ষমতায় গেছে, সেই দল এই ফল করতে পারে না।
এ কারণে দল আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত। তবে আমি মনে করি, জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচন এক নয়। আমি প্রার্থী না হলে আমার কর্মী ও সমর্থকেরা ব্যথিত ও বঞ্চিত হতেন। দল আমাকে ছাড়লেও আমি দল ছাড়িনি। দলের বাইরে কিছু করব না। জনগণ আমার পক্ষে রায় দেবে।’
মনিরুল হকের এ আশা বাস্তবে ফলবে কি না, এর উত্তর জানা যাবে আজই। জনতার রায়ের ওপরই নির্ভর করছে সবকিছু।