স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এসে বিএনপি জোট ছাড়ার ঘোষণা: নজরুল ইসলাম খান

বুধবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশ ২০-দলীয় জোট ছাড়ার ঘোষণা দেয়।
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের শরিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একটি অংশ জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় জোটের সমন্বয়ক বিএনপির নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, তাঁরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এসে এই ঘোষণা দিয়েছেন। তাই সহজেই বোঝা যায় ঘটনা আসলে কী।

আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর পুরানা পল্টনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশ ২০-দলীয় জোট ছাড়ার ঘোষণা দেয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর আগে দুপুরের দিকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা জিয়াউদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি দল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখান থেকে ফিরে পুরানা পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে বৈঠকের পর তাঁরা জোট ছাড়ার ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বাহাউদ্দিন জাকারিয়া বলেন, ‘আজ থেকে জমিয়ত জোটের কোনো কার্যক্রমে সক্রিয় থাকবে না।’

জোট ছাড়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে দলটি জোটে শরিক দলের যথাযথ মূল্যায়ন না করা, সম্প্রতি শরিকদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই তিনটি আসনের উপনির্বাচন এককভাবে বর্জন করা, বিএনপির মহাসচিবের শরিয়াহ আইনে বিশ্বাসী না হওয়ার বক্তব্য দেওয়া, আলেম-ওলামাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ না করা, জোটের যৌথ কোনো কার্যক্রম না থাকা, জমিয়তের মহাসচিব নূর হোসেন কাসেমীর মৃত্যুতে বিএনপির পক্ষ থেকে সমবেদনা না জানানোয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জোটের সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ থাকলে আগেও করতে পারতেন, আজকে কেন? তাঁদের অনেক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার আছেন, অনেকের বিরুদ্ধে মামলা আছে, অনেক নেতা-কর্মী অনেক রকমের চাপে আছেন, সে অবস্থায় তাঁরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এখন বুঝে নেন কেন তাঁরা জোট ছেড়েছেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘ওনারা অনেক দিন আমাদের সঙ্গে ছিলেন। এর মধ্য দিয়ে যদি তাঁদের নেতারা মুক্ত হন, মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হয়, অন্যায় চাপগুলো থেকে রেহাই পান—তাহলে আমরা খুশিই হব।’

জমিয়তের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকে কেন্দ্র হেফাজতে ইসলামের সহিংসতার ঘটনায় করা মামলায় তাঁদের দলের ২৫ জন নেতা বর্তমানে কারাবন্দী আছেন। বিভিন্ন মামলায় আসামি হয়ে ২৯ জন নেতা পলাতক। এ ছাড়া দলের নেতা-কর্মীদের যাঁরা বিভিন্ন মসজিদ ও মাদ্রাসার দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার চাপ রয়েছে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের আরেক অংশের নেতৃত্বে ছিলেন মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাছ। সম্প্রতি তিনি মারা যান। বর্তমানে এ অংশটির নেতৃত্বে রয়েছেন মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী (ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) ও মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম (মহাসচিব)। তাঁরা এখনো ২০-দলীয় জোটে আছে। যদিও এই অংশটির সঙ্গে আগে থেকে সরকারের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে বলে জানা গেছে।