‘শুধু সাক্কু আর রিফাত নয়, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিও’
কাল বুধবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এতে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন প্রার্থী। তবে ঘুরেফিরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু ও আওয়ামী লীগের আরফানুল হক রিফাতের নাম নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
দুই প্রার্থীকে নিয়ে গণমাধ্যমের এই অতি আগ্রহে উষ্মা প্রকাশ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার। তিনি আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাক্কু আর রিফাত দুজনই কিন্তু প্রার্থী নয়। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমিও। আমি হলাম কুমিল্লার মানুষের প্রার্থী। শোষিত মানুষের প্রার্থী, বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীর প্রার্থী।’
শাসকশ্রেণির বিপক্ষে কুমিল্লার সাধারণ মানুষের গণজোয়ার তৈরি হয়েছে—এমন দাবি করেন নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সাক্কু, রিফাত আর বাহার আলাদা নয়। এদের বিরুদ্ধে মানুষ পরিবর্তনের পক্ষে নেমেছে। সাধারণ মানুষ এবার ঘোড়া প্রতীকে ভোট দেবে।’
মনিরুল হক বিএনপির রাজনীতি করেন। বিএনপির প্রার্থী হিসেবেই কুমিল্লায় প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। পরপর দুবারের মেয়র তিনি। এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। দলীয় সিদ্ধান্ত না মানায় তাঁকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। তাঁর মতোই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন। দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন, লড়ছেন ঘোড়া প্রতীক নিয়ে। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিন উর রশীদ ইয়াছিনের শ্যালক তিনি। কুমিল্লা বিএনপির রাজনীতিতে ইয়াছিনের প্রভাব কাজে লাগিয়ে মাঠে আছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নিজাম উদ্দিন।
দলের দুই প্রার্থী নিয়ে নিজাম উদ্দিন বলেন, বহিষ্কারের অনেক আগেই বিএনপির পরিচয় দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন মনিরুল হক। বিএনপির ৯০ শতাংশ নেতা-কর্মী ঘোড়া প্রতীকের জন্য মাঠে কাজ করছেন। ইতিমধ্যে দল তাঁদের অনেকের নামে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে, তবু তাঁরা মাঠে সক্রিয় আছেন। তবে বিএনপির নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে আছেন তিনিও। এটি বিএনপির এলাকা, এখানে বারবার প্রার্থী জয়ী হয়েছেন, তাই স্থানীয় সরকার নির্বাচন হিসেবে সিটি করপোরেশনে বিএনপির অবস্থান ধরে রাখতে নেতা-কর্মীর চাপেই প্রার্থী হতে হয়েছে।
নির্বাচনী প্রচার শেষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবু প্রার্থীদের কারও কারও শঙ্কা আছে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে। এবার ইভিএমে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এটি নিয়েও আছে সন্দেহ। কেন্দ্র থেকে ইভিএমের প্রিন্টেড ফলাফল দেওয়া হবে না এবার। এর বিরোধিতা করে প্রিন্টেড ফলাফল দেওয়ার দাবি জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চিঠি দিয়েছেন নিজাম উদ্দিন। নির্বান কমিশন তাঁকে আশ্বস্ত করেছে।
সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে আশাবাদী হয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু আছে। তবে নৌকার প্রার্থী রিফাতও সংসদ সদস্য বাহার মিলে ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁরা ভোট চাচ্ছেন না, লুট করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাই জনমনে শঙ্কা আছে, নির্বাচের দিন পরিবেশ কী থাকে। এখন পর্যন্ত সুষ্ঠু ভোটের পথেই আছে পরিবেশ।