রেস্তোরাঁয় বসেছিলেন প্রতিপক্ষের লোকজন, ভেঙে দিলেন কাদের মির্জা
রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজন রেস্তোরাঁয় বসে নাশতা করার পর পৌরসভার কর্মচারীদের নিয়ে সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছেন আবদুল কাদের মির্জা। তিনি রেস্তোরাঁর মালিককে মেরে আহত করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটের আজমিরি হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে উচ্ছেদের এ ঘটনা ঘটে। আহত রেস্তোরাঁর মালিক মো. জসিম উদ্দিনকে (৪০) প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা গতকাল রাত ১০টায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আজমিরি হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মালিকপক্ষ সড়কের জায়গা দখল করে রেস্তোরাঁর সামনে বর্ধিত অংশ নির্মাণ করে। এতে শহরে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছিল দীর্ঘদিন ধরে।
মেয়র দাবি করেন, তিন মাস আগে তাঁদের রেস্তোরাঁর বর্ধিত অংশ ভেঙে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু তা না করে তাঁরা বিভিন্নভাবে তাঁর কাছে তদবির এবং পৌরসভার নির্দেশ পালনে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবার রাতে তিনি পৌরসভার কর্মচারীদের নিয়ে রেস্তোরাঁর সামনের বর্ধিত অংশটি ভেঙে দিয়েছেন।
এ সময় দোকানের মালিক-কর্মচারীরা পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর উল্টো হামলা চালান এবং পৌরসভার গাড়িরও কিছু ক্ষতিসাধন করেন বলে অভিযোগ করেন কাদের মির্জা।
তবে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জার স্থানীয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাঁর ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাত, মাহবুবুর রশিদসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ওই রেস্তোরাঁয় বসে নাশতা করেন। তাঁরা রাত আটটার দিকে রেস্তোরাঁ থেকে বের হয়ে যান।
এর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই কাদের মির্জা পৌরসভার কর্মচারীদের নিয়ে রেস্তোরাঁর সামনে আসেন। এ সময় কাদের মির্জার উপস্থিতিতে পৌরসভার কর্মচারীরা দোকানের সামনের অংশ ভাঙচুর এবং দোকানের মালিক ও কর্মচারীদের মারধর করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল প্রথম আলোকে বলেন, কাদের মির্জা ওই রেস্তোরাঁর মালিক জসিম উদ্দিনকে ২৩ মার্চ ১৫ দিনের সময় দিয়ে রেস্তোরাঁর সামনে অংশ ভেঙে ফেলতে নোটিশ দিয়েছিলেন।
নোটিশের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গতকাল শনিবার রাতে গিয়ে বর্ধিতাংশ ভেঙে দেন। খবর পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়রকে ঘটনার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এটি পৌরসভার রুটিন কাজ।
আর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কাদের মির্জা দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে হয়রানি করছেন। রাতে তাঁর প্রতিপক্ষের কিছু লোকজন রেস্তোরাঁয় বসে নাশতা করেন। এরপরে কাদের মির্জা লোকজন ও যন্ত্রপাতি নিয়ে এসে রেস্তোরাঁয় ভাঙচুর করেন।
কাদের মির্জা নিজেই তাঁকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ করেন জসিম।