‘যুব হেফাজত’ গঠন করতে চেয়েছিলেন হারুন ইজাহার
হেফাজতে ইসলামের যেকোনো কর্মসূচিতে নিজস্ব লোকজন নিয়ে ‘শক্তি প্রদর্শন’ করতেন হারুন ইজাহার। নিজস্ব বলয়ে ‘যুব হেফাজত’ নামের অঙ্গসংগঠন গড়ার চেষ্টাও ছিল তাঁর। হেফাজতসংশ্লিষ্ট নেতারা এ কথা জানিয়েছেন।
হেফাজতের সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন হারুন ইজাহার। ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের সভাপতি মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী ছেলে তিনি। হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনার ‘মদদদাতা’ হিসেবে গত বুধবার রাতে হারুনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তিন মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ। আজ সোমবার রিমান্ড আবেদনের শুনানি হবে।
র্যাব-৭ চট্টগ্রামের অধিনায়ক লে. কর্নেল মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, হারুন ইজাহারের জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে। তিনি হাটহাজারীর সহিংসতার ঘটনার মদদদাতা।
আল্লামা আহমদ শফীর নেতৃত্বে হেফাজত প্রতিষ্ঠার সময় মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরীকে নায়েবে আমির করা হয়। তবে তাঁর পরিচালিত মাদ্রাসায় বোমা বিস্ফোরণের পর থেকে তাঁকে সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। জুনায়েদ বাবুনগরীর নেতৃত্বে গত বছরের নভেম্বরে করা কমিটিতে বাবা বাদ পড়লেও ছেলে হারুন ইজাহারকে শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক করা হয়।
হারুন ইজাহার ঢাকার শাপলা চত্বরের ঘটনাসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা মোট ১৮টি মামলার আসামি। ২০১৩ সালের ১০ জুলাই লালখান বাজার মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের ঘটনার পর হারুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় তিনজন নিহত হন।
এর মধ্যে গত বছরের সেপ্টেম্বরে হাটহাজারী মাদ্রাসায় ভাঙচুর ও ছাত্র বিক্ষোভের ঘটনায় হারুন ইজাহারের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলার বাদী হেফাজতের আগের কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহী প্রথম আলোকে বলেন, ‘হুজুর (আহমদ শফী) বলতেন ইজাহার ও হারুন থেকে হেফাজতকে দূরে রাখবে। এ জন্য হুজুরের জীবদ্দশায় তাঁদের কমিটিতে রাখা হয়নি। তাঁরা হেফাজতকে নিজেদের মতো করে উগ্র সংগঠন হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন। ২০১৬ সালে যুব হেফাজত করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন হারুন। কিন্তু আহমদ শফী রাজি হননি।’
জানতে চাইলে তাঁর বাবা মুফতি ইজাহারুল ইসলাম চৌধুরী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব মিথ্যা, ষড়যন্ত্র। আমি ও আমার ছেলের সঙ্গে কোনো জঙ্গি সম্পৃক্ততা নেই।’ হেফাজতের কমিটিতে না রাখা, ‘যুব হেফাজত’ সম্পর্কে জানতে চাইলে ব্যস্ত আছেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
হারুন ইজাহার ঢাকার শাপলা চত্বরের ঘটনাসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা মোট ১৮টি মামলার আসামি। ২০১৩ সালের ১০ জুলাই লালখান বাজার মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের ঘটনার পর হারুনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় তিনজন নিহত হন। এ ঘটনায় করা হত্যা, বিস্ফোরক ও অ্যাসিড আইনের করা তিন মামলার আসামি তিনি। মামলাগুলোর বিচারকাজ চলছে। জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে র্যাবের করা মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিও তিনি।