বাম গণতান্ত্রিক জোট থেকে গণসংহতি আন্দোলনসহ ২ দলের সদস্যপদ স্থগিত
দেশের বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর মোর্চা বাম গণতান্ত্রিক জোট থেকে গণসংহতি আন্দোলন ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার বাম গণতান্ত্রিক জোটের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জোট শরিক বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোট তৈরি হয়েছিল। সেসব লক্ষ্যের মধ্যে ছিল বর্তমান ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের অবসান ঘটানো, এর জন্য জনগণের ঐক্য গড়ে তোলা। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দ্বিদলীয় বৃত্তের বাইরে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প গড়ে তোলা।
এটা বাদ দিয়ে কেউ অন্য মেরুতে যুক্ত হতে চাইলে বাম জোটের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়। সে কারণে দল দুটির বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে আগামী দিনে দুঃশাসনবিরোধী লড়াইয়ে দৃঢ় ভূমিকা রাখার জন্য দলগুলোর সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চান তাঁরা।
সদস্যপদ স্থগিত হওয়া দল দুটির নেতারা জানিয়েছেন, সাতটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সমন্বয়ে শিগগিরই নতুন একটি মঞ্চ গড়ে তুলছেন তাঁরা। নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণ অধিকার পরিষদের নুরুল হক ও জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে এই দল দুটির নেতারা এর মধ্যে বৈঠক করেছেন।
জানতে চাইলে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরেই বাম জোটের পাশাপাশি অপরাপর গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে কর্মসূচির ভিত্তিতে আরও একটি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা করে আসছি। তারই প্রক্রিয়া হিসেবে কয়েকটি দলের সঙ্গে মঞ্চ গড়ে তোলার প্রাথমিক উদ্যোগের আলাপ–আলোচনা শুরু করেছিলাম। বাম জোটভুক্ত দলগুলোকেও আমরা সেই প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলাম। গণসংহতি আন্দোলন এবং বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ছাড়া বাকি দলগুলো বাম জোটকে নিয়েই কাজ করতে আগ্রহী।
যেহেতু আমরা নতুন জোট করতে আগ্রহী, তাই বাম জোটকে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিলাম। তারা বাম গণতান্ত্রিক জোটে এই দুই দলের সদস্যপদ স্থগিত করেছে।’
জোনায়েদ সাকি বলেন, বর্তমান কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে একটা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য কীভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা যায়, সে জন্য তাঁদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
২০১৮ সালের ১৮ জুলাই বাম গণতান্ত্রিক জোট গড়ে তোলা হয়েছিল। দুই দলের সদস্যপদ স্থগিত হওয়ায় এখন এই জোটে সিপিবি ছাড়াও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন রয়েছে।