বাদ পড়লেন আ.লীগের ১৯ জন কাউন্সিলর
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদের পর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনোনয়নেও চমক দেখাল আওয়ামী লীগ। ১৯ বর্তমান কাউন্সিলরকে বাদ দিয়েছে দলটি। এর মধ্যে সাধারণ কাউন্সিলর ১৪ ও সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের ৫ জন রয়েছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ৪১টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে দলীয় সমর্থন ঘোষণা করে দলটি।
গতকাল আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে অনুষ্ঠিত স্থানীর সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয়। সমর্থন পাওয়া প্রার্থীদের তালিকা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।
গতকাল মেয়র পদে একজন নারী চিকিৎসকসহ বিএনপির মোট ছয়জন দলীয় ফরম কিনেছেন। এর মধ্যে তিনজন ফরম দাখিলও করেছেন।
বাদ পড়লেন যাঁরা
বাদ পড়া কাউন্সিলররা হলেন: ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে গাজী মো. তৌফিক আজিজ, ২ নম্বর জালালাবাদে শাহেদ ইকবাল বাবু, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে জহুরুল আলম, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলীতে মোরশেদ আক্তার চৌধুরী, ১২ নম্বর সরাইপাড়ায় সাবের আহম্মদ, ১৩ নম্বর পাহাড়তলীতে মোহাম্মদ হোসেন হিরণ, ১৪ নম্বর লালখান বাজারে এ এফ কবির মানিক, ২৫ নম্বর রামপুরে এস এম এরশাদ উল্লাহ, ২৭ নম্বর দক্ষিণ আগ্রাবাদে এইচ এম সোহেল, ২৮ নম্বর পাঠানটুলীতে আব্দুল কাদের, ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ি ওয়ার্ডে মাজহারুল ইসলাম, ৩১ নম্বর আলকরণে তারেক সোলায়মান সেলিম, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গীবাজারে হাসান মুরাদ ও ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গায় জয়নাল আবেদিন। সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলদের মধ্যে যাঁরা বাদ পড়েছেন: জেসমিন পারভিন, আবিদা আজাদ, আনজুমান আরা বেগম, ফারহানা জাবেদ ও ফেরদৌসি আকবর।
মনোনয়ন পেলেন যাঁরা
১ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে গাজী মো শফিল আজিম, ২ নম্বর জালালাবাদ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, ৩ নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ডে কফিল উদ্দিন খান, ৪ নম্বর চান্দগাঁওয়ে মো. সাইফুদ্দিন খালেদ, ৫ নম্বরে (মোহরা) মোহাম্মদ কাজী নুরুল আমিন, ৬ নম্বরে (পূর্ব ষোলশহর) এম আশরাফুল আলম, ৭ নম্বরে (পশ্চিম ষোলশহর) মো. মোবারক আলী, ৮ নম্বরে (শুলকবহর) মো. মোরশেদ আলম, ৯ নম্বরে (উত্তর পাহাড়তলী) নুরুল আবছার মিয়া, ১০ নম্বরে (উত্তর কাট্টলী) নিছার উদ্দিন আহমেদ, ১১ নম্বরে (দক্ষিণ কাট্টলী) মো. ইসমাইল, ১২ নম্বরে (সরাইপাড়া) মো. নুরুল আমিন, ১৩ নম্বরে (পাহাড়তলী) মো. ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, ১৪ নম্বরে (লালখান বাজার) আবুল হাসনাত মো. বেলাল, ১৫ নম্বরে (বাগমনিরাম) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, ১৬ নম্বরে (চকবাজার) সাইয়েদ গোলাম হায়দার, ১৭ নম্বরে (পশ্চিম বাকলিয়া) মোহাম্মদ শহিদুল আলম, ১৮ নম্বরে (পূর্ব বাকলিয়া) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ, ১৯ নম্বরে (দক্ষিণ বাকলিয়া) মো. নূরুল আলম, ২০ নম্বরে (দেওয়ান বাজার) চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, ২১ নম্বরে (জামালখান) শৈবাল দাশ সুমন, ২২ নম্বরে (এনায়েতবাজার) মোহাম্মদ সলিম উল্লাহ, ২৩ নম্বরে (উত্তর পাঠানটুলী) মোহাম্মদ জাবেদ, ২৪ নম্বরে (উত্তর আগ্রাবাদ) নাজমুল হক, ২৫ নম্বরে (রামপুর) আব্দুস সবুর লিটন, ২৬ নম্বরে (উত্তর হালিশহর) মোহাম্মদ হোসেন, ২৭ নম্বরে (দক্ষিণ আগ্রাবাদ) মো. শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরী, ২৮ নম্বরে (পাঠানটুলী) নজরুল ইসলাম বাহাদুর, ২৯ নম্বরে (পশ্চিম মাদারবাড়ী) গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের, ৩০ নম্বরে (পূর্ব মাদারবাড়ী) আতাউল্লাহ চৌধুরী, ৩১ নম্বরে (আলকরণ) মো. আবদুস সালাম, ৩২ নম্বরে (আন্দরকিল্লা) জহর লাল হাজারী, ৩৩ নম্বরে (ফিরিঙ্গীবাজার) মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, ৩৪ নম্বরে (পাথরঘাটা) পুলক খাস্তগীর, ৩৫ নম্বরে (বক্সির হাট) হাজী নুরুল হক, ৩৬ নম্বরে (গোসাইল ডাঙ্গা) হাজী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, ৩৭ নম্বরে (উ. ম. হালিশহর) মো. হোসেন মুরাদ, ৩৮ নম্বরে (দ. ম. হালিশহর) গোলাম মো. চৌধুরী, ৩৯ নম্বরে (দক্ষিণ হালিশহর) জিয়াউল হক সুমন, ৪০ নম্বরে (উত্তর পতেঙ্গা) আবদুল বারেক এবং ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে (দক্ষিণ পতেঙ্গা) ছালেহ আহম্মদ চৌধুরী।
সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের সমর্থন পেয়েছেন ওয়ার্ড-১, ২, ৩ সৈয়দা কাশপিয়া নাহরিন, ওয়ার্ড-৪, ৫, ৬ জোবাইরা নার্গিস খান, ওয়ার্ড-৭ ও ৮ জোহরা বেগম, ওয়ার্ড-৯, ১০ ও ১৩ তছলিমা বেগম, ওয়ার্ড ১৪, ১৫ ও ২১ শিউলি দে, ওয়ার্ড-১৭, ১৮ ও ১৯ শাহীন আকতার, ওয়ার্ড-১৬, ২০ ও ৩২ রুমকি সেনগুপ্ত, ওয়ার্ড-২২, ৩০ ও ৩১ নীলু নাগ, ওয়ার্ড-১২, ২৩ ও ২৪ নুর আক্তার, ওয়ার্ড-১১, ২৫ ও ২৬ হুরে আরা বেগম, ওয়ার্ড-২৮, ২৯ ও ৩৬ জিন্নাত আরা বেগম, ওয়ার্ড-২৭, ৩৭ ও ৩৮ আফরোজা জহুর, ওয়ার্ড-৩৩, ৩৪ ও ৩৫ লুৎফুন্নেছা দোভাষ বেবী ও ওয়ার্ড নম্বর-৩৯, ৪০ ও ৪১ শাহানুর বেগম।
বিএনপির মেয়র পদে ৬ জন
মেয়র পদে একজন নারী চিকিৎসকসহ বিএনপির ছয়জন দলীয় ফরম কিনেছেন। এ ছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬১ জন এবং সংরক্ষিত পদে ৬ জন গতকাল ফরম সংগ্রহ করেছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, মেয়র পদে ফরম নিয়েছেন নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম, সহসভাপতি নিয়াজ মোহাম্মদ খান, সৈয়দ আজম উদ্দিন, মহিলাবিষয়ক সহসম্পাদিকা লুসি খান এবং নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় আছে। এরপর স্থায়ী কমিটির বৈঠকে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
নিয়াজ মোহাম্মদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তিনবার ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং তিনবার চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য ছিলাম। সিটি করপোরেশন ও সিডিএর কর্মকাণ্ড খুব কাছ থেকে দেখেছি। এতে আমার অভিজ্ঞতা হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে মেয়র পদপ্রার্থী হতে চাই। দল সুযোগ দিলে নির্বাচন করব।’
সিটি নির্বাচনে সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রথম কোনো নারী মেয়র হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাঁর নাম লুসি খান। পেশায় তিনি একজন চিকিৎসক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরে আমার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। এই নগরের সমস্যাগুলো কী কী, তা আমি সহজেই চিহ্নিত করতে পারব এবং সমাধানও দিতে পারব।’
৪১টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদের জন্য গতকাল বিএনপির ৬১ জন এবং ১৪টি সংরক্ষিত পদের জন্য ৬ জন দলীয় ফরম কিনেছেন। আজ বৃহস্পতিবারও ফরম বিক্রি হবে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনে।
নগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম সাইফুল আলম বলেন, প্রথম দিনেই মোট ৬৭ জন দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছেন। বৃহস্পতিবার এই সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। নগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করবেন।