তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে সরকারের অবস্থান কী, জানতে চান ফখরুল

স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ছবি: প্রথম আলো

খালেদা জিয়া ও তাঁর পরিবারকে নিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের ‘আপত্তিকর’ বক্তব্যের বিষয়ে সরকারের অবস্থান কী, তা জানতে চেয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষে আজ সোমবার দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রশ্ন তোলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে স্পষ্ট প্রশ্ন করতে চাই প্রধানমন্ত্রীকে, এই কথা সত্য কি মিথ্যা আপনাকে জানাতে হবে, কারণ, আপনি প্রধানমন্ত্রী। এই দেশের মানুষের নিরাপত্তা এবং তাঁর নিজের মর্যাদাকে রক্ষা করা এবং একই সঙ্গে এই ভয়াবহ উক্তি যদি দেশের একজন মন্ত্রী করতে পারে, আপনার সরকারের অবস্থান কী—আমরা জানতে চাই। এটার উত্তর দিতে হবে। কারণ, এতে আপনাকে জড়িয়ে কথা বলা হয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ওই বক্তব্যে ডা. মুরাদ হাসান বলছেন, “যা কিছু করছি, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করছি এবং তা তিনি সবকিছু জানেন।” এই বক্তব্যটুকু অত্যন্ত মারাত্মক।’

তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান একসময় ছাত্রদল করতেন বলেও দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যের কথা, সে নাকি ছাত্রদল করত। সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ছিল। পরবর্তীকালে সে ছাত্রলীগে যোগদান করেছে। ধিক্কার দিই আমি তাকে।’

মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্যের কিছুক্ষণ পর দর্শকসারিতে থাকা যুবদলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা দাঁড়িয়ে মির্জা ফখরুলকে তাঁর বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। ডা. মুরাদ কখনো ছাত্রদল করেননি বলে চিৎকার করেন তিনি। এ সময় হলরুমে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।

পরে মির্জা ফখরুল তাঁর বক্তব্যের সমর্থনে বলেন, ‘একসময় সে ছাত্রদল করেছে। পরবর্তীকালে সে ছাত্রলীগের নেতা হয়ে প্রেসিডেন্ট (ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি) হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্য আমাদের। এ রকম একটা ছেলে ছাত্রদলে ছিল।’

আলোচনা সভার অন্য বক্তারাও খালেদা জিয়া ও তাঁর পরিবারকে নিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের প্রতিবাদ জানান এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, একজন মন্ত্রী ‘অশ্রাব্য–অভদ্র’ ভাষায় কটূক্তি করে যাচ্ছেন। সচিবালয়কে ‘অপবিত্র’ করেছেন। এর প্রতিবাদ করতে হবে।
নব্বইয়ের স্বৈরাচার পতন আন্দোলনের নেতা ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানউল্লাহ আমান সভায় সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচার এরশাদকে আজকের দিনে হার মানিয়েছে। আগের মতো বর্তমান সরকারকেও কঠিন ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে হবে।’

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুর রহমানের পরিচালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির ঢাকা দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান, জহির উদ্দিন স্বপন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।