জাতীয় ঐক্য আ.লীগের বিরুদ্ধে: মোশাররফ
জাতীয় ঐক্যে আওয়ামী লীগের থাকার কোনো সুযোগ নেই। বরং এই ঐক্য আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগকে ছাড়া জাতীয় ঐক্য হাস্যকর। তাঁর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে খন্দকার মোশাররফ জাতীয় ঐক্যের উদ্দেশ্য তুলে ধরেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিরোধী দলগুলোর জাতীয় ঐক্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও দলটির শীর্ষ নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। যে কারণে তাঁরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জাতীয় ঐক্যবিরোধী কথাবার্তা বলছেন। তিনি আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বলেন, যারা গণতন্ত্র বাক্সবন্দী করেছে, তাদের নিয়ে কি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ঐক্য সম্ভব? এ কারণেই জাতীয় ঐক্যে আওয়ামী লীগের থাকার কোনো সুযোগ নেই। বরং এই ঐক্য আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে।
অবশ্য জাতীয় ঐক্যের ধারণা নিয়ে মাঠে কাজ করা যুক্তফ্রন্ট ও গণফোরাম বরাবরই বলেছে, তাদের লক্ষ্য আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করা নয় বা দলটির বিরুদ্ধে কাজ করা নয়। বরং তাঁরা রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন চান। তাঁরা সুষ্ঠু নির্বাচন চান। অবশ্য যুক্তফ্রন্ট ও গণফোরাম বর্তমান ক্ষমতাসীনদের ‘স্বৈরাচারী’ বলেই অভিহিত করছে।
আলোচনা সভায় খন্দকার মোশাররফ বলেন, সরকার আইন, সংবিধান উপেক্ষা করে হিংসার রাজনীতি করতেই খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠিয়েছে। তাঁকে চিকিৎসা না দিয়ে খারাপ অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এখন বিচারের নামে তাঁকে আরও সাজা দিতে কারাগারে আদালত বসিয়েছে সরকার। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মানসিক শক্তি খর্ব করতে না পেরে তাঁকে শারীরিকভাবে দুর্বল করার চক্রান্ত চলছে। দলীয় নেতৃবৃন্দ ও পরিবারের সঙ্গেও তাঁকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। খালেদা জিয়াকে ও বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখতেই সব ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে।
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে সাবেক মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশনকে মেরামত করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের যা বলা ও করার কথা, তা সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতারা করছেন। আগামী নির্বাচনে সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। জাতীয় ঐক্যের পাশাপাশি সব দলের মধ্যে নীতিগত ঐক্য গঠিত হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে হটানো হবে।
কারাগারে আদালত বসানোর বিষয়ে মোশাররফ হোসেন বলেন, এটি প্রকাশ্য বিচার নয়। সিআরপিসির বিধান অনুযায়ী বিচার হতে হবে উন্মুক্ত। সরকার আইনের বাধ্যবাধকতা নিয়ে কথা বলে না। আর প্রধানমন্ত্রী বললেন, কারাগারের গেট নাকি খোলা ছিল। আবার জিয়াউর রহমান নাকি কারাগারেই আদালত বসিয়ে বিচার করেছিলেন। আর কত মিথ্যাচার করবেন আপনারা? তিনি আরও বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হলে আওয়ামী লীগ ৩০ আসনের বেশি পাবে না। এ বিষয়ে গোয়েন্দাদের রিপোর্ট পাওয়ার পর ক্ষমতাসীনদের মাথা খারাপ হয়েছে। যে কারণে বিরোধীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে সরকার।
নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম নামের একটি সংগঠনের ‘ষড়যন্ত্রের রাজনীতির অবসান এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ। এতে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহসভাপতি ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।