চা-চক্রে সম্পর্ক ঝালাই করেছেন প্রধানমন্ত্রী: জাপা
টানা তৃতীয়বার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় ছাড়া চা-চক্রে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তেমন কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি।
আজ শনিবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই চা-চক্র ও কুশল বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। এই চা চক্রে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং বাম জোটের নেতারা যাননি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যেসব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেসব দল ও জোটের নেতাদের সম্মানে চা-চক্রের আয়োজন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণভবনের দক্ষিণ লনের সবুজ চত্বরে এ চা-চক্র অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে গণভবনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিকেল ৪টা ১০ মিনিটের দিকে অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বিভিন্ন টেবিল ঘুরে সবার সঙ্গে কুশল ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।
চা-চক্র শেষে গণভবন থেকে বের হয়ে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাদের সঙ্গে পরিচয় ছিল তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ঝালাই করে নেওয়া এবং যাদের সঙ্গে কম পরিচয় ছিল, তাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়া আজকের চা–চক্রের মূল বিষয় ছিল। সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলাই চা-চক্রের উদ্দেশ্য ছিল। তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতারা খোলামেলা মনে আলোচনা করেছেন। আমি মনে করি এটা ভবিষ্যতে রাজনীতির জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে জি এম কাদের বলেন, ‘এটা শুধু চা–চক্র। ইনফরমাল ওয়েতে আমরা একজন আরেকজনের সঙ্গে মিশেছি। সৌহার্দ্যের যে বন্ধন সেটা আরও দৃঢ় হয়েছে।’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভালো। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি, যেখানে তাঁর নিরাপত্তার কোনো সমস্যা হবে না, এ রকম কোনো একটি জায়গায়। ওই দিনের দাওয়াতে আজকে যাঁরা ছিলেন সবাই থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী দাওয়াত কবুল করেছেন।’
বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক কোনো বক্তব্য বা এ ধরনের কিছুই হয়নি। শুধু চা-চক্র হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সবার সঙ্গে কথা বলেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের আগে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বসেছিলেন, নির্বাচনের পর আবার বসলেন। চা খাওয়া ও কুশল বিনিময় মূল বিষয় ছিল।
চা-চক্রে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মতিন খসরু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বিরোধী দলের জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, জাপা নেতা এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, জিয়াউদ্দিন বাবলু, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, সুনীল শুভ রায়, জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, জাসদ নেতা মইন উদ্দীন খান বাদল, নাজমুল হক প্রধান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা প্রমুখ।
এ ছাড়া ইসলামী ঐক্যজোটের সভাপতি মিসবাহুর রহমান চৌধুরী, তরীকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) এম এ মান্নান, মাহী বি চৌধুরী এবং সমশের মবিন চৌধুরী, বিএনএফের প্রেসিডেন্ট নাজমুল হুদা প্রমুখ।
চায়ের সঙ্গে অতিথিদের জন্য খাবারের তালিকায় স্থান পেয়েছে বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফল, ফলের জুস, কফি ইত্যাদি। এ ছাড়া ফুচকা, চটপটি, পাঠিসপটা পিঠা, ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, পুলি পিঠা, জিলাপি, কাবাব-রুটিও ছিল।