গ্যাসের দাম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে বাম জোটের ক্ষোভ
গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট প্রশ্ন রেখে বলেছে, সাধারণ মানুষ কেন ‘উন্নয়নের প্রসব বেদনা’এর শিকার হবে। এ ছাড়া সরকারের প্রতি গ্যাস নীতি নিয়ে প্রকাশ্য বিতর্কের আহ্বান জানান তারা।
আজ বুধবার এক বিবৃতিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির সভায় গ্যাসের বর্ধিত দাম বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ক্ষোভ জানানো হয়।
গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী চীন থেকে ফেরত এসে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি মেনে নিতে হবে। সে বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বাম জোট বলেছে, উন্নয়ন হচ্ছে দেশের মাত্র এক শতাংশ লোকের। আর বাকি ৯৯ শতাংশ সাধারণ মানুষ কেন ‘তথাকথিত উন্নয়নের প্রসব বেদনার’ শিকার হবে।
বাম জোট বলছে, এ বছরের বাজেট বক্তৃতায় উল্লেখ করা হয়েছে সরকার এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিবে না যাতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বাজেটের পরপরই গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর ফলে বিদ্যুতের দামসহ সব ধরনের শিল্প পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে। যা জনগণের দুর্ভোগ বাড়াবে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে বাম জোট। এ ছাড়া বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন মহল দাম কমানোর যে যুক্তি উপস্থাপন করেছিল তা বিবেচনায় নেওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা।
আন্তর্জাতিক বাজার থেকে যে গ্যাস ভারত ৬ ডলারে কেনে জানিয়ে বাম জোট বলে, বাংলাদেশ তা কেনে ১০ ডলারে। আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম কমলেও এ দেশের সাধারণ ভোক্তাদের বাড়তি দাম দিতে হচ্ছে। বাম জোট অভিযোগ করে, এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) ব্যবসায়ীদের সুবিধা দিতে এটা করা হয়েছে। তারা আরও জানায়, তিতাসের ‘সিস্টেম লস’ নামে দুর্নীতি দূর করতে পারলে বছরে ৮ হাজার ৪শ কোটি টাকা বাঁচানো সম্ভব। এ ছাড়া সামগ্রিকভাবে গ্যাস খাতের চুরি, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা দূর করলে বছরে ১৬ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব বলে জানায় বাম জোট। বাম জোটের নেতারা সরকারের প্রতি গ্যাস নীতি নিয়ে প্রকাশ্য বিতর্কের আহ্বান জানান।
বাম জোটের সমন্বয়ক ও ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নুর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বাসদের (মার্কসবাদী)কেন্দ্রীয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মানস নন্দী, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির লিয়াকত আলী প্রমুখ।