বিএনপি-জামায়াত গুপ্ত হত্যা করছে—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের জবাবে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, দেশে প্রতিনিয়ত গুম-খুন হচ্ছে সরকারের মদদে। তিনি বলেন, খুনিরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, এ জন্য তারা ধরা পড়ে না।
মে দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গত রোববার বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমাবেশে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ও সমর্থক অংশ নেন।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় না আসতে পেরে এখন গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। ক্ষমতায় আসার সুযোগটা কোথায়? দেশে কি নির্বাচন হয়েছে? আমরা তো নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় যেতে চাই না। চোরাপথে ক্ষমতায় যেতে চাই না। আপনি গেছেন চোরাপথে।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ব্যাপক লুটপাটের অভিযোগ এনে প্রথম আলো পত্রিকা দেখিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, গত সাত বছরে আওয়ামী লীগ ৩০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। বহুল আলোচিত পানামা পেপারসে যাতে ক্ষমতাসীনদের কারও নাম না আসে, সে জন্য ‘ধরাধরি’ চলছে।
সাংবাদিক শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানের মুক্তি দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ৩০০ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছে, এ-সংক্রান্ত তথ্য শফিক রেহমান সাংবাদিক হিসেবে সংগ্রহ করেছেন। এ জন্য তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শেখ হাসিনা যদি জনগণের প্রধানমন্ত্রী হয়ে থাকেন, তবে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বিষয়ে জয়কেও “ভেতরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ” করা দরকার।’
সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার জিয়া পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করে আবেগ আপ্লুত খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমার মা নেই, বাবা নেই, ভাই নেই, বোন নেই, ছেলে নেই। আমার একমাত্র ভরসা আপনারা, জনগণ। আপনারা আমার ছেলে, আপনারা ভাই, বোন।’
গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারাগারে নিলে নেবে। কিন্তু আপনারা আমার ভাই, বোন, বন্ধু; আপনারা আছেন কি না, থাকবেন কি না? আপনারা থাকবেন।’
মে দিবসকে অধিকার আদায়ের দিবস অভিহিত করে খালেদা জিয়া নির্দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনের দাবি জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষকে বিশ্বাস করে না। সে জন্য তারা ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু সে নির্বাচন কেমন হয় তা ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা নির্বাচনে সবাই দেখেছে।
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দীন সরকার, আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান প্রমুখ।