কাদেরের অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে ৫ গুণ
গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও তাঁর স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে পাঁচ গুণের বেশি। এ সময় তাঁর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা এবং সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী বিনিয়োগ বেড়েছে। নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ওবায়দুল কাদেরের জমা দেওয়া হলফনামায় দেখা যায়, তাঁর পেশা ছিল সাংবাদিকতা। লেখালেখি থেকে তাঁর আয় ছিল ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। তাঁর আইনজীবী স্ত্রীর আয় ছিল ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। একাদশ সংসদ নির্বাচনে কাদেরের দেওয়া হলফনামায় দেখা যায়, সাংসদ ও মন্ত্রী হিসেবে ভাতা এবং বই ও পত্রপত্রিকায় লেখালেখি তাঁর পেশা। এর বাইরে তাঁর আয়ের উৎস বাড়িভাড়া। কাদেরের বাৎসরিক আয় ৩১ লাখ ১৭ হাজার ৬৫১ টাকা। আর তাঁর ওপর নির্ভরশীলদের আয় ১০ লাখ ৫৬ হাজার ২১৫ টাকা।
২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে কাদেরের অস্থাবর সম্পদের প্রায় সবকিছুই জব্দ ছিল। ব্যাংকে তাঁর জমা ছিল প্রায় ৪ লাখ ৮৮ হাজার এবং স্ত্রীর নামে ছিল সাড়ে ৬৯ হাজার টাকা। দুটি হিসাবই জব্দ করা ছিল। বর্তমানে কাদেরের ব্যাংকে জমার পরিমাণ প্রায় ৮৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তাঁর স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা আছে প্রায় ২৬ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।
১০ বছর আগে কাদেরের বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ছিল সাড়ে ১৫ লাখ টাকা। স্ত্রীর বিনিয়োগ ছিল ৪২ লাখ টাকা। এসব বিনিয়োগও জব্দ ছিল। বর্তমানে কাদেরের সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ আছে প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে বিনিয়োগ আছে ৫৫ লাখ টাকা।
১০ বছর আগে কাদেরের নিজের কোনো গাড়ি ছিল না। বর্তমানে ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি গাড়ি রয়েছে তাঁর। কাদেরের স্ত্রীর নামে আগে একটি গাড়ি ছিল, সেটি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে কাদেরের একটি শটগান ও একটি পিস্তল ছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে শটগান ও পিস্তলটি বিক্রি করে দেওয়া হয়।
কাদেরের স্থায়ী সম্পদের মধ্যে রয়েছে উত্তরায় একটি ৫ কাঠার প্লট, এটা ১০ বছর আগে ৩ কাঠা ছিল। স্ত্রীর নামে রয়েছে ১ হাজার ৫০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট। এ ছাড়া যৌথ মালিকানায় ৪ দশমিক ৭৪ একর কৃষিজমি আছে। ১০ বছর আগে স্ত্রীর ভাইয়ের কাছ থেকে নেওয়া ৩ লাখ টাকা ঋণ ছিল কাদেরের। বর্তমানে কোনো দেনা নেই।
২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে মামলা ছিল ২৪টি। এর মধ্যে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে একাধিক মামলা ছিল। বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। আগের মামলাগুলো থেকে কাদের অব্যাহতি পেয়েছেন, কিছু মামলা খারিজ হয়েছে।