আগ্রাসী নীতির কারণে প্রতিবেশী সব দেশের সঙ্গেই ভারতের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে: ১২–দলীয় জোট
আগ্রাসী নীতির কারণে প্রতিবেশী সব কটি দেশের সঙ্গেই ভারতের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে মন্তব্য করেছেন ১২–দলীয় জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা। তিনি বলেন, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও আফগানিস্তান—কোনো দেশ ভারতের প্রতি আস্থাশীল নয়। সবাই ভারতের অবিবেচনাপ্রসূত নেতিবাচক আচরণে রুষ্ট।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে এহসানুল হুদা এ কথা বলেন। বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের ‘আগ্রাসী হুমকির’ প্রতিবাদে ১২–দলীয় জোট এ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে সংক্ষিপ্ত মিছিল করেন জোট নেতারা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘ভারতের কাছ থেকে আমরা অবন্ধুসুলভ আচরণ মানতে পারি না। আমরা তাদের বন্ধু ভেবে থাকি। কিন্তু বাংলাদেশের চারদিকে অশান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে—আসাম, মণিপুরসহ বিভিন্ন স্থানে। ভারত যদি তার নীতি সংশোধন না করে, তাহলে আল্লাহ জানেন তাদের ভাগ্যে কী হবে। ...আমরা বাংলাদেশে শান্তি চাই, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অটুট রেখে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব রেখে দেশ চলতে চাই।’ তিনি বলেন, ভারতের উচিত হবে বাংলাদেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি সমর্থন জানানো এবং বাংলাদেশের বিতাড়িত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়া।
সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা একটা নির্বাচনী রোডম্যাপ (রূপরেখা) ঘোষণা করে সে মোতাবেক ব্যবস্থা নিন। দেশবাসী সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে। আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি, আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা যাতে বাংলাদেশে আর রাজনীতি করতে না পারে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা রূপরেখা নিয়ে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ পরিচালিত হবে ইনশা আল্লাহ।’
সভাপতির বক্তব্যে ১২–দলীয় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বাংলাদেশ নিয়ে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র ও হুমকি সহ্য করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি জানান। তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী যেভাবে বক্তব্য দিয়েছেন, তা আমরা মানতে পারি না। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান, অবিলম্বে ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে এর ব্যাখ্যা নিন। আমাদের চোখ রাঙানি দেখিয়ে লাভ নেই।’
বাংলাদেশ এলডিপির অতিরিক্ত মহাসচিব তমিজ উদ্দিনের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ লেবার পার্টির ফারুক রহমান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির শামসুদ্দিন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের শওকত আমীন, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির ফিরোজ মো. লিটন, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির এম এ মান্নান।