কোটা সংস্কার আন্দোলন: প্রতিক্রিয়া
আলোচনার টেবিলেই সমাধান সম্ভব
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। আপিল বিভাগের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করার কথা বলছে সরকার। একই সঙ্গে সরকার কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এ সমস্যা নিয়ে প্রথম আলো চারজন রাজনীতিকের অভিমত নিয়েছে। এখানে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনুর অভিমত প্রকাশ করা হলো।
শিক্ষার্থীরা কোটাপদ্ধতির সংস্কারের বিষয়ে আন্দোলন করছেন, কোটাপদ্ধতি বাতিল চাননি। কোটাপদ্ধতি সংস্কারের বিষয়টি এমন কোনো বিষয় নয়, যেটির জন্য মারামারি বা লাঠালাঠি করতে হবে। এই আন্দোলনের যৌক্তিক পরিণতি আলোচনার টেবিলেই হতে পারে।
এর আগে ২০১৮ সালে সরকার হুট করে সমগ্র কোটাপদ্ধতি বাতিল করে দেয়। সরকারের এই সিদ্ধান্ত আমি সঠিক মনে করি না। এটা ছিল আবেগতাড়িত হয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত এবং সংবিধানের নির্দেশনার বাইরে। সংবিধানে বলা আছে, অন্য আইনে যা–ই থাকুক, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ পদক্ষেপ সরকার নিতে পারবে। তবে একটি রাষ্ট্রে কোটাপদ্ধতি অনির্দিষ্টকালের জন্য চলতে পারে না। কোটাপদ্ধতি হলো বৈষম্যবিরোধী পদক্ষেপ। বৈষম্য কমে গেলে কোটা কমে যাবে এবং সেটি একসময় বিলুপ্ত হবে।
এখন কোটাপদ্ধতি সম্পূর্ণ বাতিল বা সম্পূর্ণ বহাল—কোনোটিই সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। এখন কোটার সংস্কার প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে সরকারের উচিত এখনই কোটা সংস্কার কমিশন গঠন করা। এই কমিশনের কাজ হবে প্রতিবন্ধী, নারী, আদিবাসী ও মুক্তিযোদ্ধা—কাদের জন্য কত হারে কোটা থাকলে যৌক্তিক হবে, সেটি প্রস্তাব আকারে তুলে ধরা। পাশাপাশি কমিশন অংশীজনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে কোটা সংস্কার এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর বিলুপ্তির বিষয়ে একটি কাঠামো তৈরি করবে। সেখানেই উল্লেখ থাকবে, কত সময়ের মধ্য দিয়ে কীভাবে কোটা ধীরে ধীরে কমে আসবে এবং বিলুপ্ত হবে। এটি রাষ্ট্রের নির্বাহী আদেশেই করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে আইন করার প্রয়োজন নেই।
হাসানুল হক ইনু, সভাপতি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল