সরকারকে আরেকটু ধাক্কা দিলেই তারা পড়ে যাবে: গণতন্ত্র মঞ্চ
সরকারকে আরেকটু ধাক্কা দিলেই তারা পড়ে যাবে। ওদের ভয় দেখানোর অস্ত্রটা ভোঁতা করে দিতে হবে, এই মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পালানোর সব ব্যবস্থা তৈরি হয়ে আছে। এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে আয়োজিত সমাবেশে জোনায়েদ সাকি এসব কথা বলেন।
অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি ও সংবিধান সংস্কার করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে এই সমাবেশ ও গণমিছিল কর্মসূচির আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ। সমাবেশ শেষে টিকাটুলী মোড় পর্যন্ত গণমিছিল করেন মঞ্চের নেতা–কর্মীরা।
গণমিছিল–পূর্ব সমাবেশে জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, চলমান কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় অক্টোবরে আন্দোলন আরও উত্তাল হবে। সরকার যদি তফসিল ঘোষণার চেষ্টা করে, একতরফা নির্বাচন করার চেষ্টা করে, জনগণ রাজপথে নেমে গলায় গামছা বেঁধে তাদের ক্ষমতা থেকে নামাবে। মঞ্চের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘সেই প্রস্তুতি গ্রহণ করা দরকার। আপনি যখন আর ভয় পাবেন না, তখন ওদের অস্ত্র ভোঁতা হয়ে যাবে। তাই রাজপথে নামুন। সরকারকে আমাদের সমুচিত জবাব দিতে হবে। আমরা ওটা দিলেই তারা ক্ষমতা থেকে পালিয়ে যাবে।’
বিএনপির নেতা-কর্মীদের দ্রুত সাজা দিতে রাত আটটা পর্যন্ত বিচার বিভাগকে সরকার ব্যস্ত রাখছে বলেও অভিযোগ করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘তারা নানানভাবে সাক্ষী নিয়ে এসে দ্রুত বিচার করে বিএনপির নেতাদের একে একে জেলে ভরার ব্যবস্থা করছে। কেবল বিএনপি নয়, মানবাধিকার সংগঠনগুলোকেও তারা ছাড় দিচ্ছে না। এই সরকার এতটাই ভয় পেয়েছে যে তারা এখন গণতন্ত্র মঞ্চকেও ছাড় দিচ্ছে না। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীদের ওপরও হামলা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘যে সরকার ক্ষুদ্র প্রাণী ডেঙ্গু মশা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, সেই সরকার কীভাবে দেশ চালাবে। তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এত বছর ধরে জেনে এসেছি ডিমসহ কয়েকটি পণ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। কী দুর্ভাগ্য, এখন ডিম ভারত থেকে আমদানি করতে হচ্ছে।’
সমাবেশে ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে একতরফা নির্বাচন আর হবে না। বুকের রক্ত দিয়ে হলেও একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করা হবে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘অতীতের স্বৈরশাসকেরা যেভাবে পালিয়েছে, জনরোষে পড়েছে, আপনাদেরও (আওয়ামী লীগ) বাঁচার সুযোগ নেই।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন। উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম।
সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে রয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। গত বছরের আগস্টে সাতদলীয় জোটের গণতন্ত্র মঞ্চ আত্মপ্রকাশ করেছিল। পরে এই জোট থেকে বের হয়ে যায় গণ অধিকার পরিষদ। বর্তমানে ছয়টি দল এই জোটে রয়েছে। জোটভুক্ত দলগুলো হলো জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।