অন্তর্বর্তী সরকার দ্রব্যমূল্য কমাতে পারেনি, বরং বেড়েছে: রুহিন হোসেন
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। অথচ নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। কৃষিপণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে চলেছে। সার, কীটনাশক, ডিজেল, বিদ্যুৎ ও পানির মূল্যবৃদ্ধি উৎপাদন ব্যয় বাড়িয়ে তুলেছে।
সিপিবির আহ্বানে দেশব্যাপী ‘শোষণ–বৈষম্যবিরোধী গণতন্ত্র জাগরণ যাত্রা’র প্রথম দিনে আয়োজিত সমাবেশে এ কথা বলেন রুহিন হোসেন। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর পল্টন মোড়ে এ সমাবেশ হয়।
রুহিন হোসেন বলেন, বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্য সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের হাতে বন্দী। তাঁরাই অন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করে সাধারণ জনগণের পকেট ফাঁকা করে আর নিজেদের পকেট মোটা করেন। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে পুরো ব্যবস্থা বদল করতে হবে। উৎপাদন মূল্য কমাতে হবে, ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট, চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। উৎপাদক সমবায় ও ক্রেতা সমবায় গড়ে তোলা এবং সারা দেশে রেশনব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু করতে হবে।
রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসে দ্রব্যমূল্য কমাতে পারেনি, বরং বেড়েছে। অথচ শ্রীলঙ্কায় বামপন্থী সরকার ক্ষমতায় এসে দ্রব্যমূল্য কমিয়েছে। এটি করতে পেরেছে শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে নেওয়া তাদের নীতির কারণে। বাংলাদেশেও বামপন্থীরা ক্ষমতায় গেলে অগ্রাধিকার দিয়ে শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে নীতি প্রণয়ন করবে। ফলে নিত্যপণ্যের দাম কমানোসহ সাধারণ মানুষের আয় বৃদ্ধি, জনজীবনের শান্তি প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করা যাবে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কোনো দল বা গোষ্ঠীর হয়ে ভূমিকা না নিয়ে জনস্বার্থে ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের অন্তরের কথা জনগণ শুনতে চায়। এখনো নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা হচ্ছে না কেন? এটি তো আপনাদের অন্যতম দায়িত্ব। বিগত সরকার মানুষকে ভোটবঞ্চিত করে উন্নয়নের গল্প শুনিয়েছে। এর কারণে ক্ষমতা ধরে রাখতে তাঁকে দিন দিন স্বৈরাচারী কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠতে হয়েছে।’
আজ সমাবেশ শেষে নিত্যপণ্যের দাম কমানো, জনজীবনে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও নির্বাচনব্যবস্থার আমূল সংস্কারের দৃশ্যমান কার্যক্রম শুরু এবং নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান সামনে রেখে পল্টন মোড় থেকে পদযাত্রা শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় পথসভা ও গণসংযোগ করেন সিপিবির নেতা–কর্মীরা।
পার্টির পল্টন থানা আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কার্তিক চক্রবর্তী। সিপিবির ঢাকা মহানগর নেতা ত্রিদিব সাহা, মুর্শিকুল ইসলাম, সেকান্দার হায়াত, হয়রত আলী এই সমাবেশে ও বিভিন্ন পথসভায় বক্তব্য দেন।