খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের আগে কারাগারে ফেরত পাঠানোর সম্ভাবনা নেই: আইনমন্ত্রী
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আগামী নির্বাচনের আগে কারাগারে পাঠানোর সম্ভাবনা নেই বলে মনে করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাব-রেজিস্ট্রারদের জন্য আয়োজিত দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এমনটাই জানান।
সাংবাদিকেরা জানতে চেয়েছিলেন, আগামী নির্বাচনের আগে কি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আবার কারাগারে ফেরত পাঠানোর সম্ভাবনা রয়েছে? জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয় না খালেদা জিয়াকে ফৌজদারি কার্যবিধি ৪০১ ধারায় তাঁর দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে শর্ত যুক্তভাবে যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তার পরিবর্তন আনার কোনো চিন্তাভাবনা সরকার করছে।’
দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তির পর থেকে খালেদা জিয়া গুলশানের ভাড়া বাড়িতেই অবস্থান করছেন। ওই সময় সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রথমে ছয় মাসের জন্য শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর’-এর ধারা-৪০১ (১)-এ দেওয়া ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ স্থগিত করা হয়। এরপর প্রতি ছয় মাস পরপর তাঁর সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। সর্বশেষ গত মাসে তাঁর এই মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়।
এদিকে সাব-রেজিস্ট্রারদের জন্য আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী সাব-রেজিস্ট্রারদের উদ্দেশে বলেন, জনগণকে কোনোরূপ হয়রানি না করে দ্রুততম সময়ে সর্বোত্তম সেবা প্রদান করতে হবে। জালজালিয়াতি রোধে সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে।
আনিসুল হক বলেন, দেশের অগ্রযাত্রায় রেজিস্ট্রেশন বিভাগকে পিছিয়ে থাকলে চলবে না। এই বিভাগের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে যুগের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সেবাপ্রার্থী জনগণকে দ্রুত প্রযুক্তিনির্ভর সেবা প্রদানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসতে হবে। চিন্তাচেতনা ও মন–মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, জনগণকে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর মানসম্মত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার নিবন্ধন অধিদপ্তরের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করে সমস্ত ভূমি রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়াকে ডিজিটালাইজড করতে চায়। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে ইতিমধ্যেই ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ই-রেজিস্ট্রেশন পাইলটিং প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতার আলোকে সারা দেশের সব সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ই-রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালুর লক্ষ্যে ইতিমধ্যে ডিপিপি তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২২১ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে সারা দেশে ই-রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হলে কোনো রকম জটিলতা ছাড়াই নির্ভুলতার সঙ্গে হয়রানিমুক্ত পরিবেশে দলিলের দাতা ও গ্রহীতা রেজিস্ট্রেশন কার্য সম্পাদন করতে পারবেন।
নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক শহীদুল আলমের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার বক্তব্য দেন।