অন্তর্বর্তী সরকার উপযুক্ত সময়ে নির্বাচন দিতে সক্ষম হবে, বললেন মির্জা ফখরুল
‘অন্তর্বর্তী সরকার উপযুক্ত সময়ে নির্বাচন দিতে সক্ষম হবে’ বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ৭ নভেম্বর উপলক্ষে ঢাকার শেরেবাংলা নগরে দলীয় কর্মসূচিতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাংবাদিকেরা জানতে চান, অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাস হলো। সরকার কি কার্যকর ভূমিকা রাখছে? জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘অবশ্যই কার্যকর ভূমিকা রাখছে তারা। ইতিমধ্যে তারা অনেকগুলো কাজ করেছে এবং কাজ করছে। আমরা সবাই সরকারকে সহযোগিতা করি। আশা করি, তারা উপযুক্ত সময়ে নির্বাচন দিতে সক্ষম হবে।’
ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর দোয়া ও মোনাজাত করেন।
শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবর প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে বিএনপির মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য সব সময় ষড়যন্ত্র করেছে, অত্যাচার করেছে, নির্যাতন করেছে। এই আওয়ামী লীগ প্রায় ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রায় ৭০০ মানুষকে গুম করে। এরা হাজার হাজার মানুষকে গুম করে ও খুন করে ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে, একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছে।
ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, আল্লাহর রহমতে ২০২৪ সালে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আধিপত্যবাদকে পরাজিত করা হয়, ফ্যাসিস্টদের পরাজিত করা হয়। তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা শপথ নিয়েছি, আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আধিপত্যবাদকে রুখে দেব। এর জন্য প্রয়োজনে শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলব।’
বাংলাদেশের ইতিহাসে ৭ নভেম্বরের গুরুত্ব তুলে ধরে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ১৯৭৫ সালের এই দিনে বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক সৈনিক ও জনতা দ্বিতীয়বারের মতো এই দেশে আধিপত্যবাদকে ও তাদের দোসরদের পরাজিত করে। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল, তাদের পরাজিত করে জিয়াউর রহমানকে সামনে নিয়ে এসে তারা নতুন এক রাজনীতির সূচনা করেন। সেই রাজনীতি ছিল বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের রাজনীতি, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের রাজনীতি, বাংলাদেশে আধিপত্যবাদকে পরাজিত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার রাজনীতি। তারই ধারাবাহিকতায় ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পান।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাওয়ার পর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে পুরো পরিবর্তন করে দেন। তিনি একদলীয় শাসনব্যবস্থাকে বহুদলীয় গণতন্ত্রে নিয়ে আসেন। রুদ্ধ-বদ্ধ অর্থনীতিকে মুক্তবাজার অর্থনীতিতে পরিণত করেন। সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশে একটা নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করেন এবং তারই প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের দর্শনকে প্রতিষ্ঠিত করতে দীর্ঘকাল সংগ্রাম করছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ইতিমধ্যে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ক্ষমতায় এসেছে তিনবার। এখনো বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে।
৭ নভেম্বরের এই কর্মসূচিতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন। এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলামের সঙ্গে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমদ ও এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবীব উন–নবী খান ও শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক ও দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।