‘আমি মন্ত্রী কি নিজে গিয়ে বাস রং করব’
রাজধানীতে চলাচলকারী লক্কড়ঝক্কড় ও রংচটা কিছু বাসের ছবি নিয়ে কয়েক দিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা হচ্ছে। তবে এসব লক্কড়ঝক্কড় বাস চলাচলের বিষয়ে সরকারের কোনো গাফিলতি নেই বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বারবারই বলা হলেও বাসের চেহারা বদলাচ্ছে না। সরকারের গাফিলতির কী আছে? আমি মন্ত্রী কি নিজে গিয়ে বাস রং করব?’
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি র্যাম্প (নামার রাস্তা) খুলে দেওয়া উপলক্ষে আজ বুধবার আয়োজিত অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। আজ বেলা ১১টার দিকে কারওয়ান বাজারে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন–সংলগ্ন (এফডিসি) র্যাম্পটি উদ্বোধন করেন তিনি।
উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ওবায়দুল কাদের। রাজধানীতে এখনো লক্কড়ঝক্কড় বাস চলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকারের গাফিলতির কী আছে? আমি মন্ত্রী কি নিজে গিয়ে বাস রং করব? এসব গাড়ি আমরা বন্ধ করে দিতে পারি। কিন্তু রিপ্লেস (বিকল্প) তো নেই। বাস যখন বন্ধ করে দেব, তখন সাংবাদিকেরাই সবার আগে বিক্ষোভ দেখাবেন। লোকজন দাঁড়িয়ে আছে, হাজার হাজার মানুষ বাস পাচ্ছে না। আমাদের অবস্থা তো শাঁখের করাত। এটা করলেও দোষ, ওটা করলেও দোষ।’
ওবায়দুল কাদের ১২ বছরের বেশি সময় ধরে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। এরপরও লক্কড়ঝক্কড় বাস কীভাবে চলছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘১২ বছরের কথা বলে অপবাদ দিচ্ছেন কেন? এই সময়ে পদ্মা সেতু হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়েছে। মেট্রোরেল চালু হয়েছে। ১২ বছরে কি কম কাজ করেছি? সারা দেশে আজ কত ফ্লাইওভার, কত ফোর লেন। সমতল থেকে পাহাড়ে রাস্তা আর রাস্তা। এই মন্ত্রণালয়ে যে কাজ হয়েছে, তা আর কোথাও হয়েছে?’
কবে চালু হবে পুরো এক্সপ্রেসওয়ে
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পুরোটা চালু হতে কত দিন লাগবে—এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৭২ দশমিক ৫১ শতাংশ। এ বছরের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হবে না। আগামী বছরের শুরুর দিকে পুরোটা খুলে দিতে পারব। এর আগেও হতে পারে।’
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অর্থায়ন নিয়ে জটিলতার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভিত্তিপ্রস্তর করার সময় থেকেই অর্থায়ন নিয়ে সমস্যা। এই জটিলতার অবসান করতে আমাকেও থাইল্যান্ড যেতে হয়েছে। ঘাটে ঘাটে সমস্যা ছিল। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে কাজ করাও কঠিন। প্রকল্পের সঙ্গে যেসব দেশ জড়িত, তাদের অর্থায়ন পেতেও কিছু সমস্যা হচ্ছে। যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। অনাদরে-অবহেলায়, অনিচ্ছায় দেরি হচ্ছে, এটা মনে করা ঠিক হবে না। অর্থনৈতিক জটিলতার সমাধান না হলে ফার্মগেট থেকে বিমানবন্দর ১০ মিনিটে যাওয়া যেত না।’
স্বস্তি রাতারাতি আসবে না
রমজানে রাজধানীতে যানজট তীব্র আকার নিয়েছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইফতারের পর পুরো ঢাকা দেড়-দুই ঘণ্টায় ঘুরতে পারবেন। তখন যানজট থাকে না। রোজার মাসে কোনো কোনো সময়ে যানজট হয়, সারাক্ষণ থাকছে না। ঈদ এলে শপিংয়ের জন্য সবাই মার্কেটে যায়। পরিকল্পনামতো সবটা হয় না। একটা মেট্রো হয়েছে, আরও পাঁচটা মেট্রো হবে। স্বস্তি দিতে শুরু করেছি, রাতারাতি তো হবে না।’
বিমানবন্দর থেকে গাজীপুরের জয়দেবপুর পর্যন্ত সাড়ে ২০ কিলোমিটার সড়কে সাত বছর ধরে চলছে বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ। এ প্রকল্পের কাজ কবে শেষ হবে, সে প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ডিসেম্বরের আগেই বিআরটির বাস চলে আসবে। আশা করছি, এরপর বিআরটি প্রকল্প চালু হবে। এই প্রকল্পের সাতটা ওভারপাস শিগগিরই খুলে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্প একসময় ভোগান্তির কারণ ছিল। এখন কাজ হচ্ছে।’