আপামর জনসাধারণকে আন্দোলনে শামিল হওয়ার আহ্বান বিএনপির

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরফাইল ছবি

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দলমত-নির্বিশেষে আপামর জনসাধারণকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ছাত্র-জনতার ঐক্যের মধ্য দিয়ে যে চূড়ান্ত আন্দোলন, সেই আন্দোলন সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত, তাকে স্তব্ধ করার ক্ষমতা কারও নেই। শিক্ষার্থীদের এক দফা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

আজ রোববার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ আহ্বান জানান।

সারা দেশে হত্যাকাণ্ড এবং চট্টগ্রামে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মীর নাসির উদ্দিন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন, বর্তমান আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ এবং ঢাকায় দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হকের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসীদের হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ গত রাতে (শনিবার) সন্ত্রাস চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। আমরা বলতে চাই, এ সব করে তারা সরকারের পতন ঠেকাতে পারবে না।’

সরকারের পতন ত্বরান্বিত করতে অসহযোগ আন্দোলন সফল করার আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সাঈদ, মুগ্ধসহ শত নিরীহ ছাত্র-শিশু ও জনতার রক্তে অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর হাত রঞ্জিত হয়েছে। জনগণ এই ভয়াবহ গণহত্যার প্রতিবাদে রাস্তায় বেরিয়ে আসছে। এখনো কি তাদের (সরকার) বোধোদয় হচ্ছে না? প্রার্থনা করি, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। আর কোনো রক্তপাত নয়, আর কোনো সংঘাত নয়, জনগণের দাবি মেনে নিয়ে তারা সরে যাক।’

সরকারের পদত্যাগে বিলম্ব হলে তাতে রাষ্ট্রের ক্ষতি হবে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকার পদত্যাগ না করলে কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি কি কোনো দিন কোনো শাসকগোষ্ঠীর পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে? বাংলাদেশের ইতিহাস, পাকিস্তান আমলের ইতিহাসগুলো আপনি দেখেন। যখন জনতার আন্দোলন শুরু হয়, জনতার যখন উত্তাল সমুদ্রের সূচনা হয়, তখন কারও পক্ষেই সম্ভব হয় না এটা ঠেকিয়ে রাখা।’ তিনি ১৯৬৯, ’৭০, ’৭১ ও ’৯০-এর গণ-অভ্যুত্থানের কথা উল্লেখ করে বলেন, আজকে তার চেয়ে অনেক বেশি শক্তি নিয়ে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।

সরকার যদি দাবি মেনেও নেয়, পদত্যাগের প্রক্রিয়া কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই প্রক্রিয়া আমরা তখনই দেব, আমরা সবার সঙ্গে পরামর্শ করে বিশেষ করে ছাত্র আন্দোলন যাঁরা করছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে পরে এই বিষয়কে আপনাদের জানাব। এখনই সেই সময় উত্তীর্ণ হয়েছে বলে আমরা মনে করি না।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব সরকারের সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান না নিতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘জনগণের রক্তে, ছাত্রদের রক্তে আর যেন আমাদের রাস্তা রঞ্জিত না হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য মির্জা আব্বাস ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।