সোমবার সারা দেশে জনসমাবেশ করবে বিএনপি

রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২৯ জুলাই
ছবি: সংগৃহীত

আগামী সোমবার সারা দেশে জনসমাবেশ করবে বিএনপি। আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে আজ শনিবার ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা–নির্যাতনের প্রতিবাদে সোমবার (৩১ জুলাই) সারা দেশে এই কর্মসূচি দিল বিএনপি।

আজ সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আগামীকাল রোববার কর্মসূচি ঘোষণা করতাম। কিন্তু সেদিন আওয়ামী লীগ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সে জন্য আমরা আগামী সোমবার কর্মসূচি ঘোষণা করছি।’

গণতন্ত্র চাই বলেই এত কিছুর পরও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথেই আছি আমরা। কিন্তু সবকিছুরই একটা সীমা থাকে। আশা করি, সরকার সেটা মনে রাখবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব, বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজ রাজধানীতে যে অত্যাচার–নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে, তার প্রতিবাদে আমরা আগামী পরশু সোমবার সারা দেশে, সকল মহানগর, জেলা সদরে জনসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করছি। আগামীকালই (রোববার) আমরা প্রতিবাদের দিন হিসেবে পালনের কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু আমরা জানতে পেরেছি, আগামীকাল সরকারি দল রাজপথে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। আমরা তাই তাদের মতো একই দিনে কর্মসূচি না দিয়ে সংকট সৃষ্টি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আশা করব, গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনে কোনো বাধা সৃষ্টি করা হবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মাতুয়াইল ও শ্যামলীতে গাড়িতে আগুন দেওয়া ও ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপিকে দায়ী করার অপচেষ্টা চলছে। অথচ পুলিশের সামনেই এসব ঘটনা ঘটিয়ে ভিডিও করে অপরাধীরা নির্বিঘ্নে চলে গেছে। কারা এটা করতে পারে, তা অনুমানের জন্য বেশি বুদ্ধিমান হওয়ার প্রয়োজন নেই। নিজেরা অপরাধ করে বিএনপির ওপর দোষ চাপানোর অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

লিখিত বক্তব্যে ফখরুল বলেন, বিনা উসকানিতে বিএনপির শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। বিএনপির কর্মসূচি বানচাল করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো এবং ক্ষমতাসীন দল তাণ্ডব চালিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, ক্ষমতা জোর করে ধরে রাখার বীভৎস অপপ্রয়াস দেখে দেশ–বিদেশের মানুষ স্তম্ভিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন দল ও সরকারের নির্মম আক্রোশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন, গ্রেপ্তার করা হয়েছে অনেক নেতা-কর্মীকে। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র চাই বলেই এত কিছুর পরও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পথেই আছি আমরা। কিন্তু সবকিছুরই একটা সীমা থাকে। আশা করি, সরকার সেটা মনে রাখবে।’

পেটানোর পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে দুপুরের খাবার খাওয়ানো এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নিজেদের রক্ষা করার জন্য, নিজেদের নিরপরাধ প্রমাণ করার জন্য এ ধরনের নাটক তারা করিয়েছে। দল ও গণতন্ত্রের প্রতি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের যে কমিটমেন্ট (দায়বদ্ধতা), তা প্রমাণ করার প্রয়োজন নেই। একইভাবে আমানউল্লাহ আমানকে প্রমাণ করতে হবে না যে রাজনীতির প্রতি, দলের প্রতি, দেশের মানুষের প্রতি তাঁর কমিটমেন্টের ঘাটতি আছে। সুতরাং এই বিষয়গুলো মানুষ নেয় না। এই জিনিসগুলোকে জনগণ গুরুত্বই দেয় না। দেশের মানুষ বুঝে গেছে, জেনে গেছে যে নিজেদের রক্ষার জন্য তারা (সরকার) এ ধরনের নাটক সাজাচ্ছে।