সরকারের ভুলের খেসারত দিচ্ছে সিলেট অঞ্চলের মানুষ: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। ঢাকা, ২০ জুনছবি: সংগৃহীত

সরকারের অপরিকল্পিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে সিলেট অঞ্চলে প্রতিবছর বন্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, বৃহত্তর সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহে পানিবন্দী মানুষের কাছে এখনো কোনো ত্রাণ পৌঁছায়নি।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির এসব অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, ‘সিলেটে হাওর উন্নয়নের নামে চলছে অপরিকল্পিত কর্মকাণ্ড। বাঁধ দিয়ে নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। যে কারণে বন্যার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের ভুল নীতির খেসারত দিতে হচ্ছে বন্যা উপদ্রুত মানুষদের।’

প্রতিবছর বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরও সরকারের উদাসীনতা বিস্ময়কর বলে মন্তব্য করেন রিজভী। তিনি বলেন, বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে বন্যা ও ধ্বংস সমার্থক হয়ে উঠেছে। রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের অবস্থাও সঙিন। বৃহত্তর সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহে পানিবন্দী মানুষের কাছে কোনো ত্রাণ পৌঁছায়নি। একই অঞ্চলে প্রতিবছর বন্যা হওয়ার পরেও ‘আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম (আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা)’ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়নি সরকার।

দুর্বৃত্ত, সন্ত্রাসী আর সিন্ডিকেট বাংলাদেশকে দখল করে নিয়েছে দাবি করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, ‘কোরবানির পশুর চামড়া এবার বিক্রি হয়নি। আড়তদারেরা কোরবানির পশুর চামড়া ফিরিয়ে দিয়েছেন। এটাও সিন্ডিকেটের কারসাজি। গরিবের হককে বঞ্চিত করে সিন্ডিকেটওয়ালারা কৌশলে চামড়াকে মূল্যহীন করেছে। যখন কোনো জবাবদিহি থাকে না, তখন সব খাতই সরকারের দোসররা নিয়ন্ত্রণ করে।’

প্রতিবছর ২০ জুন আন্তর্জাতিক শরণার্থী দিবস পালিত হয়। দিবসটি প্রসঙ্গে রুহুল কবির বলেন, বাংলাদেশে প্রধান শরণার্থী সমস্যা রোহিঙ্গা। প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা নিপীড়নের শিকার হয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এখন মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। নতজানু সরকার তাদের নিজ দেশে ফেরাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছাতে গিয়ে বাংলাদেশের অনেক তরুণের সলিলসমাধি হচ্ছে। বাংলাদেশের কোটি তরুণ এখন বেকার। অনেক তরুণ কর্মসংস্থানের সুযোগ না পেয়ে দেশ ছেড়ে ভূমধ্যসাগরসহ বিভিন্ন সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। বহুসংখ্যক বাংলাদেশি এখন নিজ দেশেই পরবাসী। ভিন্ন রাজনৈতিক মতের কারণে নিপীড়ন ও অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন।

আজ বৃহস্পতিবার এই সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী, সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, সহসম্পাদক সাইফ আলী খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রফিক ও তারিকুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।