আমরা বিএনপিকে অনুসরণ করছি না: যুবলীগ নেতা মাইনুল হোসেন

রাজধানীতে আগামীকালের শান্তি সমাবেশ সামনে রেখে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়
ছবি: ড্রিঞ্জা চাম্বুগং

বিএনপির সভা–সমাবেশের দিন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন কর্মসূচি পালন করছে। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান বলেছেন, তাঁরা বিএনপিকে অনুসরণ করে কর্মসূচি পালন করছেন না। বিএনপির সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সমাবেশ–শোভাযাত্রা করছেন।

আগামীকাল শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করবে বিএনপি। এর পাল্টায় দেড় কিলোমিটার দূরে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকের পাশে ‘শান্তি সমাবেশ’ করবে যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের তিনটি সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন। দুই পক্ষকেই তাদের পছন্দমতো জায়গায় সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ডিএমপি কমিশনার অনুমতি দেওয়ার কথা জানানোর পর দুই পক্ষ থেকেই সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বিএনপির সভা–সমাবেশের দিনে কর্মসূচি পালন করা থেকে বিরত থাকার জন্য আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।  

কাছাকাছি সময়ে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের হত্যা, ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আওয়ামী যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যৌথ উদ্যোগে আগামীকাল এ শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা বিএনপিকে অনুসরণ করছি না। বিএনপিকে পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য মাঠে থাকছি না। আমরা মাঠে থাকছি বিএনপির সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য।’

এ শান্তি সমাবেশে যোগ দিতে দেশের সর্বস্তরের তরুণ-যুবসমাজ উন্মুখ হয়ে আছে বলে মন্তব্য করেন মাইনুল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আগামীকালের সমাবেশে এর প্রতিফল ঘটবে। তরুণসমাজের ঢল নামবে। কত লোক হবে, এর হিসাব মেলানো যাবে না।’

বাংলার মাটিতে ‘জিয়ার সৈনিকদের’ আর কোনো স্থান দেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা–কর্মী ছাড়াও দেশের তরুণ–যুবসমাজ দলে দলে শান্তি সমাবেশে উপস্থিত হয়ে তাঁদের প্রতি সমর্থন জানাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মাইনুল হোসেন বলেন, ‘দেশের মানুষের কল্যাণে প্রয়োজনে আত্মাহুতি দেব, তবুও আমরা তাদের হাতে দেশ তুলে দেব না।’

বিএনপি–জামায়াত সমাবেশের নামে সারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বিএনপিকে বলব, আপনারাও শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করুন। না হলে রাজপথে আপনাদের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।’

শান্তি সমাবেশের জন্য তরুণসমাজ উন্মুখ হয়ে আছে বলে দাবি করেন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হুসাইন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘জনগণের জানমালের ক্ষতি করে যারা রাজনীতি করতে চায়, দেশের মানুষের রায় না পেয়ে বাইরের সাহায্য নিয়ে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করতে চাই। বৃহত্তর ছাত্র ঐক্যের মাধ্যমেই তাদের রাজনীতি স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করব।’

সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান। তিনি বলেন, বিএনপি তারুণ্যের সমাবেশের নামে বিভিন্ন জায়গায় হামলা করেছে। নতুন করে অগ্নিসন্ত্রাসের রাজনীতি করছে। বিভিন্নভাবে বিদেশিদের সহযোগিতা নিয়ে দেশে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। শান্তি প্রতিষ্ঠায় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তারা এ শান্তি সমাবেশ করবেন।

শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত থাকবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।