উপজেলা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছেন ভোটাররা, দাবি রিজভীর
‘আওয়ামী লীগের প্রতারণার ফাঁদে পা না দিয়ে দেশের ভোটাররা উপজেলা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছেন’ বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ভোটারদের ভোটের প্রয়োজন হয় না। ফলাফল নির্ধারিত থাকে, সেটিই ঘোষিত হয়। এ কারণে ভোট নিয়ে মানুষের কোনো আগ্রহ নেই।
আজ বুধবার বেলা ১১টায় ঢাকার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন বলে রুহুল কবির রিজভী যে দাবি করেন, এ ব্যাপারে যুক্তি দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। লুণ্ঠনের মাধ্যমে উপজেলা প্রতিষ্ঠানকে করা হয়েছে লুটেরা ও দস্যু দলের আখড়া। এমনও দেখা যাচ্ছে, ভোটারবিহীন নির্বাচনে দুইবার উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে এক শ বিঘার বেশি জমির মালিক হয়েছেন। অথচ আইন অনুযায়ী, ৬০ বিঘার বেশি জমি থাকতে পারে না।’
বিএনপির এই নেতা আরও উল্লেখ করেন, যাঁরা দ্বিতীয়বার প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের আগের হলফনামায় ঘোষিত আয়ের চেয়ে কয়েকজনের আয় বেড়েছে ৩ হাজার শতাংশের বেশি। কারও আয় বেড়েছে ১ হাজার শতাংশের বেশি। গাইবান্ধায় একজন প্রার্থীর আয় বেড়েছে ৪ হাজার শতাংশ। তিনি আরও বলেন, ভোটারবিহীন নির্বাচনে কেউ চেয়ারম্যান ঘোষিত হলে হাতিশালে হাতি ও ঘোড়াশালে ঘোড়ার কোনো অভাব হয় না। সুতরাং আওয়ামী লীগের প্রতারণার ফাঁদে পা না দিয়ে দেশের ভোটাররা সর্বান্তকরণে উপজেলা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছেন।
রুহুল কবির রিজভী ছাত্রদলের সাবেক একজন নেতাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তুলে নেওয়ার অভিযোগও করেন সংবাদ সম্মেলনে। তিনি বলেন, গতকাল আসরের নামাজের সময় মসজিদে যাওয়ার পথে সিদ্ধেশ্বরী মাঠ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মাহিদুল হাসান হিরুকে সাদাপোশাকধারীরা মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়। এ ছাড়া নিজ কক্ষে তিন ঘণ্টা আটকিয়ে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের দুই নেতা নাফিউল ইসলাম জীবন ও তাঁর বন্ধু ইউনুস খানকে মারধর ও চরম নির্যাতন করা হয়। পিস্তল দেখিয়ে পায়ে গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়।
এখন আবার আওয়ামী সাদাপোশাকধারী বাহিনী নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করেছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ছাত্র, যুবক, শ্রমিক, বুদ্ধিজীবীসহ অধিকারবঞ্চিত জনগণের ওপর দমন-পীড়ন আবার শুরু হয়েছে। আবার গুমের ঘটনা বাড়ছে।
সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়েও কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক আবদুল জলিল ও ইয়াসিন আলী নির্মমভাবে নিহত হয়েছেন।
এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ভারত যেন এখন সরাসরি রক্তাক্ত আগ্রাসন চালাচ্ছে বাংলাদেশে। আর এটি সম্ভব হয়েছে ডামি সরকারের আত্মা বিক্রির জন্য। আওয়ামী সরকারের একতরফা ভারত তোষণ নীতির কারণেই বিএসএফ বাংলাদেশিদের মানুষ বলে গণ্য করে না।