২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ঢাকাসহ ৯ শহরে গণসংলাপ করবে গণসংহতি আন্দোলন

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেনছবি: বিজ্ঞপ্তি

৪ অক্টোবর থেকে গণসংলাপের আয়োজন করার ঘোষণা দিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। দলটি বলেছে, গণ–অভ্যুত্থান মানুষের ভেতর রাষ্ট্র পুনর্গঠনের যে চাহিদা তৈরি করেছে, একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরির যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, সে জন্য জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গণসংলাপের আয়োজন করছে তারা।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীতে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির পক্ষ থেকে ৯টি বড় শহরে ৯ দিন ধরে গণসংলাপের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। দলটি তাদের গণসংলাপ শুরু করবে ৪ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জে। এরপর পর্যায়ক্রমে তাদের গণসংলাপ হবে ১৭ অক্টোবর বরিশালে, ১৮ অক্টোবর খুলনায়, ১৯ অক্টোবর রাজশাহীতে, ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে, ২৬ অক্টোবর রংপুরে, আগামী ১ নভেম্বর সিলেটে ও ২ নভেম্বর ময়মনসিংহে। শেষে ২৯ নভেম্বর ঢাকায় গণসংলাপের আয়োজন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে গণসংলাপের কর্মসূচি সম্পর্কে বক্তব্য তুলে ধরেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। লিখিত বক্তব্য পাঠ করে দেশব্যাপী সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহের উদ্বোধন করেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সমন্বকারী আবুল হাসান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ছাত্র–শ্রমিক–জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার হাত থেকে দেশ মুক্ত হয়েছে। কিন্তু এখনো স্বৈরাচারী ব্যবস্থা বহাল তবিয়তে বিদ্যমান। অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বেশ কিছু কমিশন গঠন করেছে। সেগুলোর কর্মক্ষেত্র ও সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়িত হওয়া সময়ের ব্যাপার। ফলে অনেক ক্ষেত্রেই পুরোনো ব্যবস্থার ধারাবাহিকতা লক্ষ করা যাচ্ছে।

গতকাল সোমবার তৈরি পোশাকশিল্পশ্রমিকদের আন্দোলনে অতিরিক্ত বল প্রয়োগের ফলে শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গণসংহতি আন্দোলন মনে করে যে শ্রমিকদের দাবিদাওয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল থেকেই বর্তমান পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমধানে যেতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এখনো প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিপূর্ণভাবে কার্যকর অবস্থায় নেই। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনাও ঘটছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরে হামলা, নারী হয়রানি এমনকি মাজারেও হামলা চলছে। অবিলম্বে প্রশাসনকে সম্পূর্ণ কার্যকর করা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা গুম করার মতো ঘটনার যাতে কোনো পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে বিষয়ে সরকারকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।

গণ–অভ্যুত্থানের শক্তির ভেতরে বিভেদ সৃষ্টি করা এবং কোনো কোনো মহলের বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের বিষয়েও সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপের অভাব দেখা যাচ্ছে বলে মনে করে গণসংহতি আন্দোলন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনতে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সমস্যার সমাধান, দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপ প্রয়োজন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধ ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার বিষয়েও এখন পর্যন্ত কার্যকর পদক্ষেপ লক্ষ করা যাচ্ছে না।

গণসংহতি আন্দোলন মনে করে, বর্তমান সরকারের ব্যর্থতার কোনো সুযোগ নেই। গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে এগিয়ে নিতে, এই সরকারকে সফল করতে, রাজনৈতিক দলগুলোও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অবিলম্বে যেসব ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন, তা চিহ্নিত করে অন্তর্বর্তী সরকার সেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করবে বলে তারা আশা করে।

সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দীন, কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন, দীপক রায়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আলিফ দেওয়ান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মিজানুর রহমান মোল্লা, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মনিরুল হুদা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।