সিলেট ও রাজশাহী সিটিতে ভোট গ্রহণ শুরু
সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ বুধবার সকাল আটটা থেকে এই দুই সিটির নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু, চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। দুই সিটিতেই এবার সব কটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ হচ্ছে।
এর আগে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া মোটামুটি নির্বিঘ্নেই নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। আজ ভোট গ্রহণের জন্য দুই নগরে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে পাঁচ সিটির নির্বাচনের মধ্যে গাজীপুর, বরিশাল ও খুলনা—এ তিন সিটিতে ভোট হয়েছে। আজ সিলেট ও রাজশাহীতে ভোট হচ্ছে।
সিলেটের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্র অনুযায়ী, নগরের ৪২টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এখানে মেয়র পদে ৮ জন এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনে কাউন্সিলর পদে ৩৬০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ১৯০টি কেন্দ্রে মোট ভোটকক্ষ রয়েছে ১ হাজার ৩৬৪টি। এর মধ্যে ১৩২টি কেন্দ্রকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সিলেট সিটিতে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীরা হলেন—আওয়ামী লীগের মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মো. নজরুল ইসলাম, জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আবদুল হানিফ, মো. ছালাহ উদ্দিন, মো. শাহ্ জামান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা। আর বরিশাল সিটি নির্বাচনের দিন দলের মেয়রপ্রার্থীর ওপর হামলার পর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান সিলেটের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
সিলেটের স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক দিন ধরেই নগরে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। আজও থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে স্থানীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে। এ ছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপিসহ বিরোধী বলয়ের অনেক দল এ নির্বাচন বর্জন করায় মেয়র পদে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন হয়ে পড়েছে। এ দুটি কারণে ভোটারের উপস্থিতি কম হবে। কাউন্সিলর প্রার্থীরা যদি কেন্দ্রে ভোটার নিয়ে যান, তাহলে উপস্থিতির হার কিছুটা বাড়বে।
এদিকে বর্তমান সরকারের অধীন কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার অবস্থানে থেকে বিএনপি পাঁচ সিটির নির্বাচন বর্জন করেছে। যদিও কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয় না, এরপরও এবার বিএনপি এ পদেও দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্বাচন না করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সিলেটে মেয়র পদে ১ জন এবং কাউন্সিলর পদে ৪২ জন প্রার্থী হয়েছেন। অবশ্য বিএনপি এরই মধ্যে তাঁদের বহিষ্কার করেছে।
অন্যদিকে জামায়াতপন্থী হিসেবে পরিচিত ২০ নেতা-কর্মীও এখানে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হন। জামায়াত এসব কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচন করতে কোনো বাধা দেয়নি এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেয়নি তাঁদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া কয়েকটি ওয়ার্ড বাদে প্রায় সব কটি ওয়ার্ডেই আওয়ামী লীগের একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের আয়তন ৯৬ দশমিক ৭২ বর্গকিলোমিটার। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২। এর মধ্যে নতুন ভোটার সংখ্যা ৩০ হাজার ১৫৭। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭১ হাজার ১৬৭ জন, নারী ভোটার ১ লাখ ৮০ হাজার ৮০৯ জন। হিজড়া ভোটার ৬ জন।
এই সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান, জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ও জাকের পার্টির প্রার্থী লতিফ আনোয়ার মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
দুই সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের বলেন, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ ভোট আয়োজনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।