পৌনে এক ঘণ্টাতেও তিন কেন্দ্রে ভোটারের দেখা নেই
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে তিন কেন্দ্রে আজ বুধবার সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত ভোটার উপস্থিতি একেবারেই কম দেখা গেছে। তিনটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, প্রথম পৌনে এক ঘণ্টায় দুটি কেন্দ্রে কোনো ভোটই পড়েনি৷ আরেকটি কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ১৪টি। এই তিন কেন্দ্রে মোট ভোটার ১০ হাজার ৭৬৮ জন।
সকাল সাড়ে আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের মোট ভোটার ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩১৯ জন। মোট ১৩২টি কেন্দ্র ও ৮২৬টি ভোটকক্ষে ভোট গ্রহণ চলছে। সব কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হচ্ছে ইভিএম পদ্ধতিতে।
সরাইল সদরের উচালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সরাইল অন্নদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট শুরুর প্রথম ৪৫ মিনিটে একজন ভোটারও আসেননি। কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা অলস সময় কাটাচ্ছেন৷
সরাইল অন্নদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ হাজার ২৩৮ জন। ভোটকক্ষ ৭টি। এখন পর্যন্ত কোনো ভোটার আসেননি। বেলা বাড়লে পরিস্থিতি বোঝা যাবে।
আলীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার ৩ হাজার ৮৩৩ জন৷ এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ১৪টি। এই কেন্দ্রে মোট ভোটকক্ষ ৯টি। কিছু কক্ষে এখনো ভোট পড়েনি। যেমন নিজ সরাইল এলাকার পুরুষ ভোটকক্ষে ভোটার ৪০০ জন৷ এই কক্ষে কোনো ভোট পড়েনি।
আলীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুল আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভোটার উপস্থিতি একেবারেই কম। কিছু কক্ষে ভোট পড়েনি। কিছু কক্ষে দু–তিনটি ভোট পড়েছে।
এই নির্বাচনী মাঠে আছেন চার প্রার্থী। তাঁরা হলেন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া (কলার ছড়া), আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ (মোটরগাড়ি), জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সহাসচিব আবদুল হামিদ ভাসানী (লাঙ্গল) ও জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম (গোলাপ ফুল)।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিজয়ী হয়েছিলেন। গত ১১ ডিসেম্বর তিনি দলীয় সিদ্ধান্তে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য হয়। শুরু থেকেই উকিল সাত্তারের নির্বাচনী প্রচারে সরব ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
নির্বাচনে ভোটার আনার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের৷ এক কর্মিসভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মেম্বার-চেয়ারম্যানদের।
কলার ছড়া প্রতীকে ভোট নেওয়ার দায়িত্ব আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের। প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য ছয় সদস্যের সমন্বয় কমিটি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা রয়েছেন এসব কমিটিতে।
সরাইল সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সালাউদ্দিন সুরুজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল পৌনে ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত সময়ে অনেক নারী ভোটারের কাছে গিয়েছি কেন্দ্রে আনার জন্য। তাঁরা পালটা প্রশ্ন করেন, কিসের ভোট? আমাদের দায়িত্ব দিয়েছে ভোটার আনার জন্য, কিন্তু কেউ আসতে চায় না।’