স্বাধীনতার চেতনার নামে অন্য দেশের কাছে আমার দেশ ইজারা দেওয়া নয়: জামায়াতের আমির

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে জাতিকে মুখোমুখি করে রাখা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘স্বাধীনতার চেতনার নামে অন্য দেশের কাছে আমার দেশ ইজারা দেওয়া নয়।’

সোমবার রাত ১০টার দিকে রংপুরের পাগলাপীরে জামায়াতের এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন। উত্তরবঙ্গ সফর উপলক্ষে সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে যান জামায়াতের আমির। পথে রংপুরের পাগলাপীরে পথসভায় বক্তব্য দেন তিনি।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে জাতিকে মুখোমুখি করে রাখা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, একদল স্বাধীনতার পক্ষে, আরেক দল বিপক্ষে। পক্ষের যে দলটি, (তারা) স্লোগান দিয়ে মানুষকে শোষণ করেছে। তারা কার্যত এ দেশকে অন্য দেশের হাতে ইজারা দিয়ে রেখেছে। স্বাধীনতার চেতনার নামে অন্য দেশের কাছে আমার দেশ ইজারা দেওয়া নয়।’

জামায়াতের আমির বলেন, ‘একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে যেভাবে মর্যাদা ও অধিকার পাওয়া দরকার, যেভাবে একটি সুন্দর শিক্ষাব্যবস্থা, মজবুত অর্থনীতি ও সম্মানজনক পররাষ্ট্রনীতি হওয়ার কথা ছিল, তার কোনো কিছুই আমরা পাই নাই। ৫৩টি বছর জাতিকে বিভক্ত করেছে।’

দেশে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান—চারটি ধর্মের মানুষ পাশাপাশি যুগ যুগ ধরে বসবাস করে আসছে বলে উল্লেখ করেন শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে পারস্পরিক হিংসা, বিদ্বেষ নেই বললেই চলে। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কিন্তু ওই দলটি শুধু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে নয়, বরং ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু বলে আরেকটা গন্ডগোল লাগিয়ে রেখেছে।’

আওয়ামী লীগের নাম উল্লেখ না করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘মানুষের শান্তির ঘুম কেড়ে নিয়েছে। বিচার বিভাগকে তছনছ করেছে। আর্মি অফিসারদের খুন করেছে। জামায়াতে ইসলামীর দেশপ্রেমিক শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দকে খুন করেছে। শত শত নেতা-কর্মী খুন করেছে। আলেম-ওলামাকে খুন করেছে। পায়ে ডান্ডাবেড়ি, হাতে হ্যান্ডকাফ দিয়ে আলেম-ওলামাকে এক জেল থেকে আরেক জেলে টানাটানি করেছে।’

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতির মামলার প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির বলেন, ‘তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। বলে যে ৩ কোটি টাকা তিনি মেরে খেয়েছেন। কোথায় খেলেন তিনি? তিনি তো একটা অ্যাকাউন্টের টাকা আরেকটা অ্যাকাউন্টে নিয়ে সেভ (সুরক্ষিত) করেছেন। একটা টাকাও মারেননি। তিন কোটির জন্য যদি এমন কষ্ট হয়, তাহলে তোমরা ২৬ লক্ষ কোটি টাকা যারা বাংলাদেশে চুরি করেছ, তোমরা তৈরি থাকো। তোমাদের পরিণতি ভয়ংকর। এ অপরাধের জন্য ক্ষমা করে দেওয়ার অধিকার কারও নেই।’

মঙ্গলবার সকালে গাইবান্ধায় জনসভা এবং দুপুরে মিঠাপুকুরে পথসভায় জামায়াতের আমিরের প্রধান অতিথির বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।