জাতীয় পার্টি নিষেধাজ্ঞা ভেঙে কর্মসূচি করতে চাইলে ‘বসে না থাকার’ ঘোষণা
জাতীয় পার্টি (জাপা) আগামীকাল শনিবার নিষেধাজ্ঞা ভেঙে কর্মসূচি করতে চাইলে ঘরে বসে থাকবে না ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র শ্রমিক জনতা’। তবে কাকরাইল ও আশপাশের এলাকায় পুলিশের নিষেধাজ্ঞা জারিকে ইতিবাচকভাবে দেখছে তারা।
‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র শ্রমিক জনতা’ প্ল্যাটফর্মের উদ্যোক্তা বিন ইয়ামিন মোল্লা আজ রাতে প্রথম আলোকে এ অবস্থানের কথা জানান।
এর আগে জাতীয় পার্টির সমাবেশের দিন আগামীকাল রাজধানীর কাকরাইলসহ আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
গতকাল বৃহস্পতিবার ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র শ্রমিক জনতা’র ব্যানারে একদল ব্যক্তি একটি মিছিল নিয়ে রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে যান। সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর তাঁদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ওই কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়। অবশ্য দুই পক্ষেরই দাবি, তারা আগে হামলার শিকার হয়ে প্রতিরোধ করেছে।
গতকালের ঘটনার পর আজ শুক্রবার দুপুরে জাতীয় পার্টির বনানীর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও আগামীকাল কাকরাইলে জাতীয় পার্টি সমাবেশ করবে। এই কর্মসূচিকে ঘিরে বেলা ১১টায় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও জেলা কার্যালয়গুলোর সামনে ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক জনতা।
এর মধ্যে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে ডিএমপি বলেছে, আগামীকাল পাইওনিয়ার রোডের ৬৬ নম্বর ভবন, পাইওনিয়ার রোড, কাকরাইলসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় যেকোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হলো।
পুলিশের এই নিষেধাজ্ঞার পর ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র শ্রমিক জনতা’ তাদের কর্মসূচি কার্যত স্থগিত করেছে। এ বিষয়ে এই প্ল্যাটফর্মের উদ্যোক্তা ছাত্র অধিকার পরিষদের (নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন গণ অধিকার পরিষদের ছাত্রসংগঠন) সাবেক সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা আজ রাত সাড়ে আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশের সিদ্ধান্তকে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি। এই নিষেধাজ্ঞার পরও জাতীয় পার্টি সভা–সমাবেশ করতে চাইলে আমরা বসে থাকব না।’
গতকাল সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের ঘটনার একপর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে বলেন, ‘এবার এই জাতীয় বেইমানদের উৎখাত নিশ্চিত’। তিনি শিক্ষার্থীদের মিছিল নিয়ে বিজয়নগরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি মিছিল টিএসসি থেকে রওনাও দেয়।
জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় শিক্ষার্থীদের ওপর জাতীয় পার্টির নেতা–কর্মীরা হামলা করায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহসহ কেউ কেউ ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফোরামের সিদ্ধান্ত ছিল না। তবে জাতীয় পার্টির বিষয়টি নিয়ে আপাতত আমাদের কোনো কর্মসূচির চিন্তা নেই।’