একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বেশি সময় লাগার কথা নয়: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীফাইল ছবি

‘একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বেশি সময় লাগার কথা নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশনে যতটুকু স্বাধীনতা নিশ্চিত হওয়া দরকার, সেই সব প্রয়োজনীয় সংস্কারের সুপারিশ করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বেশি সময় লাগার কথা নয়। আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পল্লি চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথাগুলো বলেন।

গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার শেষে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সেনাপ্রধান ওয়াকার–উজ-জামানের বক্তব্যের পর রুহুল কবির রিজভী এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রীয় সংবিধানকে তারা (আওয়ামী লীগ) কেটে টুকরা টুকরা করে নিজেদের মতো করে একটা মুড়ির ঠোঙা বানিয়েছে। মানে, ওই ঠোঙা থেকে তিনি যখন মনে করবেন মুড়ি নিয়ে খাবেন, আবার রেখে দেবেন।’ তিনি বলেন, এখন এই সংবিধানের আসল সারমর্ম জনগণের নাগরিক অধিকার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে যতটুকু ক্ষমতা দেওয়া দরকার, সেই সব প্রয়োজনীয় সংস্কারের সুপারিশ করে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করা প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে বিএনপির এই নেতা ভারতের ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত বন্ধুত্ব চায় শুধু শেখ হাসিনার মতো একজন ভয়ংকর রক্তপিপাসু স্বৈরশাসকের সঙ্গে, বাংলাদেশের জনগণকে এরা পছন্দ করে না। কারণ, শেখ হাসিনা থাকলে ভারতের আধিপত্য বাংলাদেশে বিস্তার লাভ করবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাম্প্রতিক বক্তব্যের উল্লেখ করেন।

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানির প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘আমাদের অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা ইলিশ মাছ রপ্তানি করি। এখানে আবেগ দিয়ে কথা বললে হবে না।’ এ বক্তব্যের উল্লেখ করে তিনি বলেন, উপদেষ্টা একজন গুণী মানুষ, অর্থনীতিবিদ। বাংলাদেশ কোনোদিনই ইলিশ মাছ রপ্তানির ব্যাপারে বাধা দেয়নি। অর্থ উপদেষ্টা আবেগের কথা বলেছেন। যখন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন সীমান্তে বাংলাদেশি কাউকে যদি দেখো, তার পা ওপরের দিকে ঝুলিয়ে রেখে শাস্তি দেবে। তখন তো আমাদের মধ্যেও আবেগ তৈরি হয়।’

রিজভী বলেন, ‘আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য এটা তো সব সময় হয়ে এসেছে; কিন্তু আবেগ তখনই আসে, যারা আমাদের (বাংলাদেশি) এমন হেয় করে, যারা আমাদের সঙ্গে ক্রীতদাসের মতো আচরণ করে, তখন তো আমরা বলবই আমরা ইলিশ মাছটা কেন দেব? পেঁয়াজ আমরা আমদানি করি ভারত থেকে; কিন্তু ভারতে যখন সংকট হয়, তখন তো তারা পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়, রপ্তানির ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করে দেয়; তারা কিন্তু আমাদের এক ইঞ্চিও ছাড় দেয় না।’

পল্লিচিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী, গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক শামিমুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দীন আলম প্রমুখ।