ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ২৪ ডিসেম্বরের আগে: ওবায়দুল কাদের

ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ছবি: প্রথম আলো

আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হয়েছে। অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রথম অধিবেশন শেষে বলেছেন, ২৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগেই নতুন কমিটি পাবে ছাত্রলীগ।

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ছাত্রলীগের পুরুষ সদস্যরা একই রঙের টি-শার্ট ও ক্যাপ এবং নারী সদস্যরা একই রঙের শাড়ি পরে সম্মেলনে অংশ নেন। শুরুতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের জন্য নির্মিত অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ‘বিএসএল কমিউনিটি’ অ্যাপের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন ছাত্রলীগের বিদায়ী সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

কমিটি ২৪ ডিসেম্বরের আগে

ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফেরানোর আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগের কর্মীরা খুব বড় গলায় বলেন, “আমি অমুক ভাইকে মেইনটেইন করি।”

ভাইকে মেইনটেইন করতে হবে কেন? এটা কোনো কথা? ছাত্রলীগে এসব তো জীবনেও দেখিনি। কিসের মেইনটেইন? মেইনটেইন করবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, শেখ হাসিনার সততা ও সাহস এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ। শৃঙ্খলা মেইনটেইন করবে। ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফেরানোর আহ্বান জানাচ্ছি।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দ্বিতীয় অধিবেশন বসবে। সেখানে প্রার্থীদের নাম প্রস্তাব ও সমর্থন হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিটেরও নাম প্রস্তাব ও সমর্থন করিয়ে নিতে হবে। এরপর ছাত্রলীগের অভিভাবক জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে তা জমা দেবেন। আশা করছি, ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হবে। এর আগেই ইনশা আল্লাহ ছাত্রলীগ নতুন কমিটি পাবে।’

আরও পড়ুন

যা বললেন বিদায়ী দুই নেতা

শেখ হাসিনার সামনে সাংগঠনিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন ছাত্রলীগের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের ১২০টি সাংগঠনিক জেলা ইউনিটের মধ্যে আমরা ৬৯টিতে নতুন কমিটি করেছি। কিন্তু আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর প্রথম দুই বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে জনসমাবেশ বন্ধ থাকায় আমরা জেলা শাখাগুলোর সম্মেলন করতে পারিনি। করোনার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর আমরা কিছুসংখ্যক ইউনিটের সম্মেলন আয়োজন করেছি। প্রায় ৩০টি মেডিকেল কলেজে আমরা নতুন কমিটি গঠন করতে পেরেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সম্মিলিত বেসরকারি মেডিকেল ইউনিটেও আমরা নতুন কমিটি দিয়েছি। এ ছাড়া প্রতিটি বিভাগীয় শহরে আমরা যতটা সম্ভব কমিটি করে দিয়েছি। আর যেসব ইউনিটে সঠিকভাবে পুনর্বিন্যাস হয়নি, তারা পরবর্তী নেতৃত্বের মাধ্যমে ছাত্রলীগ পেয়ে যাবে।’

আরও পড়ুন

ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন না করার আহ্বানও জানান লেখক। প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শুধু একটি কথা বলতে চাই, প্রাণপ্রিয় নেত্রী, আপনি গণতন্ত্রের মানসকন্যা। আপনি সামরিক শাসনের হাত থেকে গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছেন, মুখ থুবড়ে পড়া গণতন্ত্রকে উদ্ধার করেছেন।

আপনি ছাত্রলীগকেও একই ধারাবাহিকতা অনুযায়ী পরিচালনা করেন। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে আপনি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এত বড় সংগঠনে এত আয়োজন কিংবা কাউন্সিলর-ডেলিগেটদের মাধ্যমে এটা করার দুঃসাহস আমাদের নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘অতীতে দেখা গেছে, ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনকে তারা ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে দেখতে পারেনি। নিজের ব্যক্তিস্বার্থ বাস্তবায়নে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নিয়ে তারা ছিনিমিনি খেলেছে। প্রাণপ্রিয় নেত্রীর প্রতি আমার অনুরোধ, এবার যেন নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত না করা হয়, আপনার নির্ধারণের মাধ্যমে ছাত্রলীগের পরবর্তী নেতৃত্ব নির্বাচন হোক, এটাই ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আপনার কাছে আমার একান্ত চাওয়া।’

বিদায়ী সভাপতি আল নাহিয়ান খান বলেন, ‘সম্মেলনের মাধ্যমে যে নতুন নেতৃত্ব আসবে, তাদের অগ্রিম অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই সম্মেলনের মাধ্যমে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন, সেই সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’

আরও পড়ুন