নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে চলতে পারে না: নারী সমাবেশে বক্তারা
কোটা সংস্কার আন্দোলনে হত্যা, হামলা, মামলা ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এক নারী সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেছেন, ‘সরকারের নির্দেশে পুলিশ জনগণের ওপর যেভাবে গুলি ছুড়েছে, তা সম্পূর্ণ আইনবহির্ভূত ও সংবিধানপরিপন্থী। এই নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড, মামলা ও গণগ্রেপ্তার কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে চলতে পারে না।’
আজ শনিবার রাজধানীর পল্টনের মোড়ে এই সমাবেশ হয়। ‘ছাত্র জনতার পাশে নারীসমাজ’ ব্যানারে আয়োজিত এই সমাবেশে নারী অধিকারকর্মী, রাজনৈতিক কর্মী, গৃহিণী, শিক্ষক, গবেষক, লেখক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে আওয়ামী লীগের উচ্চপদস্থ নেতারা ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে যেভাবে ছাত্রদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছেন, তা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। পরবর্তী সময়ে পুলিশ ও বিজিবির সহযোগিতায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে গুলি করে। এ পর্যন্ত দুই শতাধিক ছাত্র ও জনতাকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়। এই মুহূর্তে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছাত্রদের গণগ্রেপ্তার চলছে। এমনকি গতকাল সন্ধ্যায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের তিনজন সমন্বয়ককে সরকারি বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে।
দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার নৈতিক ভিত্তি এই সরকার হারিয়ে ফেলেছে উল্লেখ করে বক্তারা অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগের দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তব্য দেন আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকী, লেখক ও গবেষক রেহনুমা আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক স্নিগ্ধা রেজওয়ানা, আইনজীবী সাদিয়া আরমান, কোটা সংস্কারে আন্দোলনে নিহত মীর মুগ্ধের স্বজন জাকিয়া শিশির, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি দীপা মল্লিক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ইডেন কলেজের সভাপতি শাহীনুর সুমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি নুজিয়া হাসিন ও বিপ্লবী নারী ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক আমেনা আক্তার। সমাবেশে সংহতি জানান নারীনেত্রী শিরিন হক।
নারী সংহতি, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র, বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, রাষ্ট্র সংস্কার ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, সিপিবি নারী সেল, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ সাম্যবাদী আন্দোলনের নারী প্রতিনিধিরা কর্মসূচিতে অংশ নেন। বক্তব্য, স্লোগান ও গণসংগীতের মাধ্যমে সমাবেশটি আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল পল্টন মোড় থেকে প্রেসক্লাব মোড়ে এসে শেষ হয়।