বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে সমাবেশের অনুমতি পাবে না
বিএনপিকে ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই করতে হবে। নয়াপল্টনে দলটিকে সমাবেশ করতে না দেওয়ার বিষয়ে অনড় সরকার। তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নির্বিঘ্নে সমাবেশ করতে দেওয়ার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন দুই দিন এগিয়ে আনা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ও সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে। সূত্র বলছে, বিএনপি ১০ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চাইলে মঞ্চ তৈরি করার জন্য তাদের সময় প্রয়োজন। সেখানে ৮ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের যে সম্মেলন নির্ধারিত আছে, তা বহাল থাকলে বিএনপির সমাবেশের প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হবে না। এ জন্য ছাত্রলীগের সম্মেলন এগিয়ে আনা হয়েছে। এই সম্মেলন ৬ ডিসেম্বর হবে।
রোববার বিকেলে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের এক সভায়ও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৯টি বিভাগীয় গণসমাবেশ শেষে আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চায় বিএনপি। এ জন্য দলটি ১৫ নভেম্বর ঢাকা মহানগর পুলিশকে (ডিএমপি) অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছে।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে নেতাদের বলেছেন, বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না। রাস্তাঘাট বন্ধ করে জনভোগান্তি বাড়িয়ে সমাবেশ করতে কাউকে দেওয়া হবে না।
বৈঠকে দেশের ৫টি পৌরসভার মেয়র ও ৫১টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে দলের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। এরপর দেশের সর্বশেষ রাজনৈতিক অবস্থা, অর্থনৈতিক সংকট ও সরকারবিরোধী অপপ্রচার নিয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টা আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সূত্র জানায়, এ সময় প্রধানমন্ত্রী নেতাদের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাবে, এ অপপ্রচার চালাচ্ছে বিএনপি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে মনোনয়ন বোর্ডের সভায় উপস্থিত এক নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বিএনপি বড় জমায়েত করবে তাতে আপত্তি নেই। তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করুক। দলীয় কার্যালয়ের সামনে সর্বোচ্চ ৪০ থেকে ৫০ হাজার লোক ধরবে। তাদের বেশি লোকের প্রস্তুতি, সে জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কেন নয়?
বৈঠক সূত্র জানায়, ছাত্রলীগের সম্মেলন এগিয়ে আনার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারও গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার ইচ্ছা সরকারের নেই। সহযোগিতার মানসিকতা থেকেই সরকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিতে চায়।
অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জানান, ছয় মাস স্বাভাবিকভাবে চলার মতো সবকিছুই সরকার মজুত রেখেছে। আগামী বছরের জানুয়ারিতে ডলার–সংকট কেটে যাবে। আর মার্চ-এপ্রিলে অর্থনীতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। আমদানি ও রপ্তানির মধ্যে সমন্বয় করছে সরকার। বিলাসদ্রব্যের আমদানি কমিয়ে আনা হয়েছে। হুন্ডি (অবৈধ পথে অর্থ পাঠানো) বন্ধে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে। পাশাপাশি প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানো সহজ করা এবং প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়েও সরকার কাজ করছে। এসব বিষয় দেখভালের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে তিন সদস্যের একটা কমিটি করা হয়েছে বলে জানান।