সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) বদ্ধপরিকর। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ঘাটতি নির্বাচনব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থার অভাব। আজ বুধবার নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে ইসির বৈঠকে এ বক্তব্য উঠে আসে।
আজ বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। বৈঠকে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনসহ অন্য চার নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার ও নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বৈঠকে ইসির স্বাধীনতা, ক্ষমতা, দায়দায়িত্ব থেকে শুরু করে নির্বাচনসংক্রান্ত প্রায় সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইসি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর। ইসি যাতে তাদের কাজ সুচারুরূপে করতে পারে এবং সফল হয়, সে জন্য সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে কতগুলো সংস্কার প্রস্তাব দেওয়া হবে। এর মধ্যে কিছু ইসি বাস্তবায়ন করবে। কিছু সরকার করবে এবং বাকিটা সরকার ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বাস্তবায়িত হবে। সংস্কার কমিশন এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি, তবে কতগুলো বিষয় চিহ্নিত করেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ইসির পক্ষ থেকে সংস্কার কমিশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। তবে মতবিনিময়ে অনেক কিছু উঠে এসেছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ইসির অন্তর্নিহিত ক্ষমতা আছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের খাতিরে তারা রাতকে দিন ও দিনকে রাত করা ছাড়া সবই করতে পারে। তিনি আরও বলেন, অতীতে নির্বাচনসংক্রান্ত অনেকগুলো অপরাধ হয়েছে। যাঁরা অপরাধ করেছেন, যাঁদের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে, তাঁদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আসতে হবে।
আগের কমিশন থেকে বলা হয়েছিল, ফল প্রকাশের পর শাস্তির কোনো সুযোগ থাকে না—এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম বলেন, তাঁরা ইচ্ছে করলেই এটা করতে পারতেন। আদালতে রায় আছে, গেজেট হওয়ার আগে তাঁরা নির্বাচন বাতিল করতে পারতেন এবং তাঁদের পুনর্নির্বাচন দেওয়ারও ক্ষমতা আছে। তবে সেটা তাঁরা প্রয়োগ করেননি।
বৈঠকের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে ঘাটতির জায়গাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ঘাটতির জায়গাগুলো সবার জানা।
সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে বড় ঘাটতি কী, এমন প্রশ্নের জবাবে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, সবচেয়ে বড় ঘাটতি হচ্ছে নির্বাচনব্যবস্থার ওপর আস্থার ঘাটতি। সেটা ফিরিয়ে আনতে হবে।
কীভাবে সেটা সম্ভব, এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, এটি একটি সামষ্টিক বিষয়। একলাইনে এটা বলা সম্ভব নয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, নির্বাচনের পথনকশা নিয়ে বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি। নির্বাচনের পথনকশার সঙ্গে কতগুলো জাতীয় উদ্যোগ, সংস্কার কার্যক্রম, ইসির অভ্যন্তরীণ প্রস্তুতির বিষয় রয়েছে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কীভাবে হওয়া উচিত, নির্বাচন ভালোভাবে করার জন্য কী করণীয়—এসব নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।