আপনারা কী করছেন: অন্তর্বর্তী সরকারকে রিজভীর প্রশ্ন
জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এই সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রতি রাতে কারওয়ান বাজারে ৫০ কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয়। সেখানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে স্বাভাবিক। কিন্তু আপনারা কী করেন? এত দিনেও সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছেন না। জনগণ তো বলবেই, শেখ হাসিনার সময়ে জিনিসপত্রের দাম বাড়ত, এখনো বাড়ছে। তফাতটা কী?’
আজ শনিবার ঢাকার জুরাইনের বিক্রমপুর প্লাজার সামনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিতরণ ও গণসংযোগ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন। সেখানে তিন ডেঙ্গুসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ক্ষমতায় থাকতে শেখ হাসিনা ডেঙ্গু প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাঁর উদ্দেশ্য জনসেবা ছিল না, তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, জনগণের টাকা মেরে বিদেশে পাচার করা।
দেশের প্রতিটি কারাগার শেখ হাসিনার ‘আয়নাঘর’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, তাঁর (শেখ হাসিনা) বিরুদ্ধে যাঁরাই কথা বলেছেন, গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেছেন, তাঁদের সেই ঘরে বন্দী করে রাখা হতো। শুধু বিএনপি নেতা-কর্মী নয়, যাঁরা গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেছেন, তাঁদের ওপর জুলুম-নির্যাতন চলেছে।
দুই দফা দাবিতে পল্লী বিদ্যুতের কর্মচারীদের সাম্প্রতিক আন্দোলন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘সে সময় (হাসিনার আমলে) দাবি করলেন না কেন? আপনাদের ন্যায্য দাবি থাকতে পারে; কিন্তু শাটডাউন করলেন কেন? কার স্বার্থে করলেন? হাসিনাকে প্রত্যাবর্তন করাতে চান? আবার বাংলাদেশ ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক লুট করার ব্যবস্থা করতে চান?’
উল্লেখ্য, গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে নিয়োজিত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুই দফা দাবিতে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করে আসছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার সমিতির ২০ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেন সমিতির কর্মচারীরা। এতে জেলায় জেলায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিলেন গ্রামের মানুষ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে রিজভী আরও বলেন, ‘গড়িমসি না করে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। জনগণের কাছে নির্বাচিত সরকারের দায়বদ্ধতা থাকবে। যেই ক্ষমতা আসুক, জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’
অনুষ্ঠানে সাবেক সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইশরাক হোসেন বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তানভীর আহমেদ।