খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশগুলোয় বিএনপির নেতারা ভারতের সঙ্গে সরকারের সমঝোতা স্মারকগুলোর কড়া সমালোচনা করেছেন। ভারত সরকারকে উদ্দেশ্য করে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাইলে এ দেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক করতে হবে, সরকারের সঙ্গে নয়।
গাজীপুরের রথখোলা মাঠে সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশের চারদিক থেকে অক্টোপাসের মতো বিদেশি শক্তি হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এদের থেকে বাঁচতে হবে। স্লোগান দিলে চলবে না। পুলিশের ভয়ে তরুণেরা যদি আন্দোলন না করে, তাহলে এই দেশ থেকে গণতন্ত্র চিরতরে বিলীন হয়ে যাবে। অনেক রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন করেছি, কারও দাসত্ব করার জন্য নয়।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তিন দিনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সোমবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম ছাড়া সব মহানগরে এ সমাবেশ হয়। বৈরী আবহাওয়ার জন্য চট্টগ্রামের সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে শনিবার ঢাকায় বড় সমাবেশ করে বিএনপি। আগামী বুধবার সারা দেশের জেলা শহরে সমাবেশের কর্মসূচি রয়েছে।
আজ বিভিন্ন মহানগরে সমাবেশগুলোয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতারা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
গাজীপুরের সমাবেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশ ছোট্ট, সুন্দর, শান্তিপ্রিয় একটা দেশ। দেশটার দিকে হায়েনাদের লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে। এই লোলুপ দৃষ্টি বন্ধ করে দিতে হবে, যেন লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকাতে না পারে। আমাদের নেত্রী বলেছেন, বিদেশে আমাদের বন্ধু আছে, প্রভু নাই। আমরাও বলি, সীমান্তের ওপারে আমাদের কোনো প্রভু নাই। আমরা প্রভুত্ববাদে বিশ্বাস করি না, বন্ধুত্বে বিশ্বাস করি।’
নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ার সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘খুনের মামলার আসামিও জামিন পান। ফাঁসির আসামিরও জামিন হয়েছে। আমাদেরও জামিন হয়, একমাত্র বেগম খালেদা জিয়ার জামিন হয় না। প্রতিবেশীদের সন্তুষ্ট করতে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁকে জেলে আটকে রেখে তিলে তিলে মারতে চায় আওয়ামী লীগ।’
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে ৪৯টি চুক্তি হয়েছে উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, একটি চুক্তিও শেখ হাসিনা পার্লামেন্টে আলোচনা করেননি। জনগণকে অন্ধকারে রেখে চুক্তি করা হয়েছে।
ময়মনসিংহের সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান দেশবাসীকে বিএনপির সঙ্গে এক কাতারে মাঠে নামার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের লড়াই শুরু হয়েছে, সে লড়াই থামবে না।’
এ ছাড়া বরিশালের সমাবেশে ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, খুলনায় যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, ফরিদপুরে ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী ও রংপুরের সমাবেশে শামসুজ্জামান দুদু প্রধান অতিথি ছিলেন।
প্রায় আট মাস পর বিএনপির দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে কর্মসূচি পালন করছে দলটি। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেই সমাবেশগুলোয় নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।