কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতা দেশদ্রোহীদের কর্মকাণ্ড: আমু
কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ‘দেশদ্রোহীদের’ কর্মকাণ্ড বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪–দলীয় জোটের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু। তিনি বলেছেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে ধ্বংস সব জনগণের বিরুদ্ধে, দেশের বিরুদ্ধে হয়ে থাকে। দেশদ্রোহীদের কর্মকাণ্ডের কুফল ভোগ করবে জনগণ। জনগণ প্রতিটি ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম দুর্দশাগ্রস্ত হবে, অসুবিধায় পড়বে। এটাই সন্ত্রাসীরা তৈরি করেছে। তারা স্বাধীনতার শত্রু, এ দেশের শত্রু।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আগুনে পোড়া মহাখালীর দুর্যোগ ভবনসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা আজ সোমবার ১৪ দলের নেতাদের পরিদর্শন শেষে এ কথাগুলো বলেন আমির হোসেন আমু। প্রতিনিধিদল বনানীর সেতু ভবনও পরিদর্শন করে।
আমির হোসেন আমু বলেন, ৫৩টি গাড়ি, ল্যাপটপ, ডিজিটাল সেন্টারসহ সবকিছু ধ্বংস করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে আজ সারা দেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ বাধাগ্রস্ত হলো, অসহায় মানুষ বঞ্চিত হলো। বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় মানুষ যে যাবে, সাহায্য সহযোগিতা করবে, সেই অবস্থান আজ রাখেনি।
আমু বলেন, একটা দখলদার বাহিনী দেশে যেসব ধ্বংসযজ্ঞ করে, তারই কিছু নমুনা তারা এখানে রেখে গেছে। আজ আর বলতে অসুবিধা নেই, তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে এখন পর্যন্ত মেনে নিতে পারেনি, বিশ্বাস করে না।
আন্দোলনকারীরা বারবার এ ধ্বংসযজ্ঞে জড়িত না বলেছেন উল্লেখ করে ১৪ দলের সমন্বয়ক বলেন, এই আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে, তাঁদের কাঁধে ভর করে দুষ্কৃতকারীরা, স্বাধীনতার বিরোধিতাকারীরা আজ এটা করছে। দেশবাসীর উচিত সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো এবং তাদের প্রতিহত করা।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অন্যরা আমাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিত। কিন্তু এখন সামনে যে ঝড় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, সেটা যদি আসে, একটা বন্যা যদি আসে, তাহলে সেটা আমরা কীভাবে মোকাবিলা করব, জানি না। আমরা যে সক্ষমতা অর্জন করেছিলাম, পৃথিবীর কাছে প্রশংসনীয় হয়েছিলাম, সেগুলো ধ্বংস করে দিয়ে দুষ্কৃতকারীরা বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’
মেনন আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় স্থাপনার ওপর আঘাত করে তারা চেষ্টা করেছে রাষ্ট্রকে অকার্যকর করে দেওয়ার। অকার্যকর রাষ্ট্র যদি তারা প্রমাণ করতে পারে, তাহলে বিদেশ থেকে যে সহযোগিতা তারা পাচ্ছে, তা হয়তো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। সে কারণেই এই সেতু ভবনের ওপর আক্রমণকে আমাদের জাতীয় জীবনের ওপরও আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।’
শিক্ষার্থীরা এ সেতু ভবনের ওপর আক্রমণ করবে, এটা কল্পনাও করা যায় না উল্লেখ করে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, তাঁরা বলেছেনও তাঁরা আক্রমণ করেননি। এটা স্পষ্ট যে জামায়াত-শিবিরের প্রশিক্ষিত ক্যাডারদেরই খুলনা, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রংপুর থেকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছিল।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, গণআজাদী লীগের সভাপতি এস কে শিকদার প্রমুখ।