মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় নির্বাচন প্রশ্নে তিন শীর্ষ দলের বৈঠক
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, রাজপথের বিরোধী দল বিএনপি এবং সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে চা–চক্রে যোগ দেন বাংলাদেশে সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দুই কংগ্রেসম্যান।
আজ রোববার বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের গুলশানের বাসায় এ চা–চক্র অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত এ চা–চক্র চলে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলটির অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ও সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়শা খান, নাহিম রাজ্জাক ও তামান্না নুসরাত। তিনজনই সংসদ সদস্য। অন্যদিকে বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলটির প্রচার সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদলে ছিলেন তিন সংসদ সদস্য—শেরিফা কাদের, রানা মোহাম্মদ সোহেল ও নাজমা আকতার।
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার কংগ্রেসম্যান (রিপাবলিকান) রিক ম্যাক্রোরমিক ও হাওয়াইয়ের কংগ্রেসম্যান (ডেমোক্র্যাট) এড কেইস ছাড়াও চা–চক্রে রাষ্ট্রদূত পিটার হাস উপস্থিত ছিলেন।
চা–চক্রে উপস্থিত সূত্র বলছে, বিএনপির পক্ষ থেকে শহীদ উদ্দীন চৌধুরী বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না উল্লেখ করে তাঁদের দলের অবস্থান তুলে ধরেন। একই সঙ্গে দলটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বলেও ওই বৈঠকে জানান তিনি। তাঁর অভিযোগ ছিল, দেশে এক ব্যক্তির শাসন চলছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শহীদ উদ্দীন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়—এটাই তাঁরা সেখানে বলেছেন। কেন আজকে এক দফা দাবির আন্দোলনে নামতে হয়েছে, এর প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো বিধান রাখা সম্ভব নয়।
সূত্র জানায়, বৈঠকে কংগ্রেসম্যান এড কেইস আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলকে বলেন, শুধু তোমাদের দেশে নয়, সারা পৃথিবীর কাছে অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে। জবাবে আওয়ামী লীগ নেতারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ হিসেবে তাঁদের আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান। একই সঙ্গে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতির কথা জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব কী কারণে, সেই বিষয়টি তুলে ধরেন দুই কংগ্রেসম্যান। এর মধ্যে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ইন্দো-প্যাসিফিকে অঞ্চলে বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, একই সঙ্গে বাংলাদেশের জনসংখ্যা। সারা পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা কমে যাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যেন গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকে, সেটা চায় আমেরিকা।
আইনের মাধ্যমে সরকার নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করেছে বলে মার্কিন প্রতিনিধিদলকে জানান আওয়ামী লীগের এক সদস্য। তিনি আরও বলেন, সামনের অধিবেশনে আরেকটি আইন আসবে। সেখানে নির্বাচনের সময়ে বিশৃঙ্খলা করা বা বাধা দেওয়ার ক্ষেত্রে শাস্তির বিধান রাখা হবে।
জাতীয় পার্টির শেরিফা কাদের প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা সব সময় যা বলেন, একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দরকার এবং নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ যাতে নিশ্চিত হয়, সেটাই তাঁরা বলেছেন।