রাষ্ট্রপতির থাকা না–থাকার প্রশ্নে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা, দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক হয়ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

রাষ্ট্রপতির পদে মো. সাহাবুদ্দিনের থাকা না–থাকার প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বহুল আলোচিত রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের বিষয় নিয়ে শেষ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা করা হয়।

বন, পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের প্রশ্নে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সমঝোতার ভিত্তিতেই বিষয়টাতে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।

আরও পড়ুন

রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে দেশজুড়ে নানা আলোচনার মধ্যে গতকাল বুধবার দেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপির শীর্ষপর্যায়ের তিন নেতা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের অবস্থান জানিয়েছেন। দলটি এ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চায় না। বিএনপি মনে করে, রাষ্ট্রপতি পদে শূন্যতা হলে সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হবে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ নেই বলে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের মন্তব্য সম্প্রতি একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। সেই মন্তব্যকে ঘিরে বিভিন্ন মহল থেকে তাঁর পদত্যাগের দাবি ওঠে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের দাবি তুলে গত মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করে। ইনকিলাব মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে মঙ্গলবার রাতে বঙ্গভবনের সামনেও বিক্ষোভ করা হয়।

এর আগে গত সোমবার রাষ্ট্রপতির মন্তব্যের ব্যাপারে সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি, এটা হচ্ছে মিথ্যাচার এবং এটা হচ্ছে ওনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল। কারণ, তিনি নিজেই ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে পেছনে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ওনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন।’

আরও পড়ুন

মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হয়। গভীর রাতে ইনকিলাব মঞ্চের ব্যানারে বঙ্গভবনের সামনেও বিক্ষোভ দেখানো হয়।

গত কয়েক দিনে মো. সাহাবুদ্দিনকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্রপতি পদে নতুন মুখ খুঁজতে সরকারের তরফ থেকে নানামুখী তৎপরতার খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের কাছে রাষ্ট্রপতি হওয়ার প্রস্তাব করা হলেও তিনি রাজি হননি, এমন খবরও বেরিয়েছে সংবাদমাধ্যমে।

তবে রাষ্ট্রপতির বিষয়ে আজই প্রথম অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা করা হয়। একাধিক উপদেষ্টা জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের ব্যাপারে ছাত্রদের দাবি রয়েছে। অন্যদিকে কোনো কোনো রাজনৈতিক দল বলছে, রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করলে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি হবে এবং সেটা তারা চায় না। এ পরিস্থিতি আলোচনা করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। এর ফলে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেই এ ব্যাপারে সমাধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

আরও পড়ুন