দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ কেমন দেখছেন?
কাজী জাফর উল্ল্যাহ: এবারের নির্বাচনে স্থানীয় প্রশাসন সার্বক্ষণিক নিক্সন চৌধুরীর পক্ষে কাজ করছে। ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহান নাকি নিক্সন চৌধুরীর ভাই। শাহজাহান সাহেব বলেছেন, ‘দেখি কোনো শক্তি যদি পারে যে আমাকে ফরিদপুর থেকে সরাবে।’ মানুষের ইচ্ছায় তাঁকে ফরিদপুর থেকে সরতে হয়েছে (গত ২৭ ডিসেম্বর ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহানকে বদলি করা হয়েছে)। প্রচারণায় যেখানেই যাই, ভোটারদের কাছ থেকে প্রচুর সাড়া পাচ্ছি। গণতন্ত্রে যদি মানুষের ঢল নামে, কোনো শক্তি, কোনো টাকা, কোনো প্রশাসন—কেউ ঠেকাতে পারবে না।
আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে নির্বাচন করে হেরেছেন। এবার কী মনে করছেন?
কাজী জাফর উল্ল্যাহ: আপনারা দেখেছেন, নিক্সন চৌধুরী একবার আনারস প্রতীক, একবার সিংহ প্রতীকে নির্বাচন করেছেন। এবার ঈগল প্রতীকে নেমেছেন। তিনি বারবার বলেন, নৌকা প্রতীক এনে ভোট করবেন। কিন্তু তিনি নৌকা প্রতীক আনতে পারেন না। এবার তিনি খুব খারাপ খেলেছেন। সবাইকে মিষ্টি খাওয়াইছেন। কিন্তু লাভ হয়নি। প্রতীক পাননি। আমাদের নেত্রী জানেন, নৌকার খাঁটি লোক কারা। আর কারা নৌকা বিক্রি করে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করছে। আমি কষ্ট করছি, যুদ্ধ করছি, জনগণের অধিকার রক্ষার জন্য। মানুষ যাতে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন। বালুর জন্য যাতে মানুষের বাড়িঘর–খেত ধ্বংস না করা হয়। নির্বাচনী হলফনামায় তিনি সঠিক তথ্য দেননি। নির্বাচনী হলফনামায় ১০ বছরে তাঁর সম্পত্তি ৫৪ গুণ বেড়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। আসলে ৫৪ গুণ নয়, তাঁর সম্পত্তি বেড়েছে ৫৪০ গুণ।
নির্বাচন উপলক্ষে প্রচুর টাকা ছড়ানো হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে কী বলবেন?
কাজী জাফর উল্যাহ: নির্বাচনে আমি কোনো টাকা ছড়াচ্ছি না। আমি শুনেছি, সাধারণ জনগণ বলছেন, তিনি (নিক্সন চৌধুরী) টাকা ছড়াচ্ছেন। পদ্মা সেতু চালু হয়েছে। সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর ১৭টি ঘর হয়েছে চাঁদা তোলার জন্য। যার নাম কাউন্টার মডেল। সেখান থেকে ৩০০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছেন, যার মধ্যে ১০০ টাকা তাঁর। ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় ২০০ টাকায় যাওয়া যায়। অথচ নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা। ১০০ টাকা সংসদ সদস্যের পকেটে যাচ্ছে। উনি স্বতন্ত্র প্রার্থী। আওয়ামী লীগের প্রার্থী নন। আপনাদের প্রথম আলো পত্রিকা বলেছে, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগের দিন সব ভোট হয়ে গেছে। তার সুবিধাভোগী নিক্সন চৌধুরী নিজেই।
বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসা কতটা চ্যালেঞ্জ মনে করছেন?
কাজী জাফর উল্যাহ: দুঃখজনক হলেও সত্য, বিএনপি–জামায়াত জোট এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। তারা যেকোনো মূল্যে চাচ্ছে নির্বাচন বানচাল করতে। মানুষ সেটা চান না। গণতন্ত্র বলে, ‘আমার ভোট আমি দিব, যাঁকে খুশি তাঁকে দিব’। বিএনপির উচিত ছিল তাদের জোট নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া। ভোটের মাধ্যমে তাদের পক্ষে মানুষ যদি রায় দিতেন, তারা সরকার গঠন করত। আমাদের কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু তারা সে পথে না হেঁটে ভোট বর্জন করেছে। এটা তাদের উচিত হয়নি। জনগণকে ভোট দেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চাই না। জনগণ অবশ্যই ভোট দিতে আসবেন।
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
কাজী জাফর উল্যাহ: আপনাকেও ধন্যবাদ।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আরিফুর রহমান ও প্রবীর কান্তি বালা।