সরকারঘেঁষা ছয়টি ইসলামি দলের নতুন জোট গঠন

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগঘেঁষা ইসলামি কিছু দল নিয়ে নতুন একটি জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে লিবারেল ইসলামি জোট।

এই জোটে দলের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬। এর একটিরও নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নেই। নামসর্বস্ব এসব দলের জোটে আরও আটটি দল যুক্ত হবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। ২৯ মে এই জোটের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

নতুন জোটের দলগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক পার্টি, আশেকানে আউলিয়া পরিষদ, বাংলাদেশ ওলামা মাশায়েখ ও বাংলাদেশ ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ। কৃষক শ্রমিক পার্টির নেতৃত্বে আছেন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের নাতনি ফারজানা হক। কৃষক শ্রমিক পার্টি বাদে বাকি দলগুলো তরিকতপন্থী ইসলামি দল হিসেবে পরিচিত। ২০০৮ সালের পর থেকে তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গী বা মহাজোটের অংশ হিসেবে পরিচিত।

নতুন জোটের চেয়ারম্যান মাইজভান্ডারের পীর সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহাম্মদ। অবশ্য মাইজভান্ডারের আরেকটি দল হচ্ছে তরিকত ফেডারেশন। এটি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটে আছে। এর সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী সংসদ সদস্য। পারিবারিক মতানৈক্য থেকে নজিবুল বশরের ভাতিজা সাইফুদ্দীন আহাম্মদ আলাদা দল করেছেন।

জোটের নির্বাহী চেয়ারম্যান হয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী। তাঁর দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে ছিল। তিনি সরকার সমর্থক বলে পরিচিত। এর বাইরে বাকি চার দলের শীর্ষ নেতারা কো-চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন।

জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাঁচ বছর ধরে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে আলাপ করে ১৬ মে সুপ্রিম পার্টির কার্যালয়ে এই জোট গঠনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। আরও আটটি দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ২৯ মের আগেই দলগুলো জোটে যোগ দেবে বলে নিশ্চিত করেছেন নেতারা।

মিছবাহুর রহমান আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইসলামি মূলবোধের ভিত্তিতে এই জোট গঠিত হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও গণতন্ত্রচর্চায় বিশ্বাসী এই জোট হবে তরিকত ও কওমিপন্থী আলেম ও আধুনিক শিক্ষিতদের প্ল্যাটফর্ম।

জোটে কোনো নিবন্ধিত দল নেই কেন—এ প্রশ্নে মিছবাহুর রহমান বলেন, জোটের কোনো কোনো দল ভবিষ্যতে নিবন্ধন পাবে। যাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, তাদের মধ্যেও নিবন্ধিত দল আছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সরকারঘনিষ্ঠ ইসলামি দল ও ছোট দলগুলোকে একত্র করে আগামী নির্বাচনে তাদের অংশ নেওয়া নিশ্চিত করতে সরকারের ভেতর থেকে চেষ্টা আছে। বিএনপি নির্বাচনে না এলে তাদের দিয়ে অংশগ্রহণ বাড়ানো হবে। এই জোটে যুক্ত হতে আলোচনা করছিল নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দল ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ। তবে দলটি এই প্রক্রিয়া থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। দলটির চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী প্রথম আলোকে বলেন, এই জোটের অধিকাংশ দলের সাংগঠনিক অবস্থা ভালো নয়। এ জন্য তিনি জোট থেকে বিরত থেকেছেন। তবে তাঁর দল আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে ভোট করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।