আগামী তিন বছরের জন্য আওয়ামী লীগের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। চারটি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আগে যাঁরা ছিলেন, তাঁরাই আছেন। তবে জ্যেষ্ঠতার ক্রমে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর ৩৪টি পদের মধ্যে সবার ওপরে নাম সাধারণ সম্পাদকের। এরপর চারজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের নাম। সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থেকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ জন্য সবার ওপরে যিনি থাকেন, তাঁকে ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
২০০৯ সালের পর থেকে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মাহবুব উল আলম হানিফ। এবার তাঁর স্থানে উঠে এসেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি ২০১৯ সালের জাতীয় সম্মেলনে প্রথমবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদে আসেন। আগের কমিটিতে তাঁর ক্রম ছিল ৩ নম্বরে।
আগের কমিটিতে ২ নম্বর ক্রমে ছিল শিক্ষামন্ত্রী দিপু মনির নাম। এবার তাঁর নাম সবার শেষে, ৪ নম্বরে নেমে গেছে। আর ৪ নম্বরে থাকা আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম তিনে স্থান পেয়েছেন। গত ২৪ ডিসেম্বর বিকেলে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের সমাপনী পর্বে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের নাম ঘোষণায় এই ক্রমে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের নাম বলেছিলেন। পরে ওই দিন রাতে আওয়ামী লীগের ওয়েবসাইটে এভাবেই ক্রম সাজিয়ে নাম তোলা হয়। অবশ্য কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দলটির ওয়েবসাইট থেকে নামগুলো সরিয়ে ফেলা হয়।
আজ রোববার বিকেলে গণভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের সভায় আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় ছয়টি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকের পর গণভবনের ফটকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বৈঠকে আলোচনার বিষয় জানান। সেখানে তিনি দলের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়া নেতাদের নাম ঘোষণা করেন।
পরে আওয়ামী লীগের প্যাডেও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের তুলে ধরা হয়। সেখানেও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদের ক্রমে ১ নম্বরে হাছান মাহমুদ এবং ৪ নম্বরে দীপু মনির নাম দেখা যায়।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ওপরের ক্রম থেকে নিচে নেমে যাওয়ার নজির খুব একটা দেখা যায় না। এবারের এ পরিবর্তনের পেছনে কী কারণ, তা স্পষ্ট নয় কারও কাছেই।
এবার সম্মেলনের আগে মাহবুব উল আলম হানিফ, হাছান মাহমুদ, বাহাউদ্দিন নাছিম—তিনজনই সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে ছিলেন। দীপু মনিকে সাধারণ সম্পাদকে পদোন্নতি না দিলে সভাপতিমণ্ডলীতে উন্নীত করা হতে পারে—এ জল্পনাকল্পনাও ছিল।
কিন্তু ঘটেছে ঠিক উল্টো। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ করে দলের কোনো নেতা বক্তব্য দিতে চাননি।