মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির জন্য স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই

ফিলিস্তিনের জনগণের সঙ্গে সংহতির আন্তর্জাতিক দিবসে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। সেখানে বক্তব্য দেন ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবেছবি: সংগৃহীত

সব আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার সনদ চরমভাবে লঙ্ঘন করে ইসরায়েলি বাহিনী গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। যে পশ্চিমা দেশগুলো কথায় কথায় বিশ্বকে মানবাধিকারের সবক দেয়, তারা আজ ফিলিস্তিনের গণহত্যা সম্পর্কে কার্যত নীরব। আরব লিগ ও ওআইসির মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ। মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির জন্য স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।

আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংহতি সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ফিলিস্তিনের জনগণের সঙ্গে সংহতির আন্তর্জাতিক দিবসে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এই সভার আয়োজন করে।

সিপিবির এই সংহতি সভায় ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বিশেষ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। সত্তরের দশকের শুরুর দিকে ১৯৭৩ সালে ফিলিস্তিনের জনগণের কাছে চিকিৎসাসামগ্রী পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের মানুষ সব সময়ই সংকটের মধ্যে আছে। বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের এক অকৃত্রিম বন্ধু।

সভায় সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স) বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ এবং দোসর ইসরায়েলকে পরাস্ত করতে হবে। গণহত্যাকারী ইসরায়েলকে জাতিসংঘ থেকে বহিষ্কার এবং আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার বিচার করতে হবে। স্বাধীন সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ঘোষণা করতে হবে।

বিশ্বব্যাপী মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসন বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে সাংবাদিক সোহরাব হাসান বলেন, ‘তাদের মদদে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর যে আগ্রাসন, গণহত্যা পরিচালনা করছে, তার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাই।’ স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের মধ্য দিয়েই এর একমাত্র স্থায়ী সমাধান সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি।

সিপিবির আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান হাসান তারিক চৌধুরী বলেন, সব আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার সনদ চরমভাবে লঙ্ঘন করে সাম্রাজ্যবাদের প্রত্যক্ষ মদদে জায়নবাদী ইসরায়েলি বাহিনী গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। যে পশ্চিমা দেশগুলো কথায় কথায় বিশ্বকে মানবাধিকারের সবক দেয়, তারা আজ ফিলিস্তিনে গণহত্যা সম্পর্কে কার্যত নীরব। আরব লিগ এবং ওআইসির মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।

হাসান তারিক চৌধুরী বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে যতটা সরব, গাজায় গণহত্যা নিয়ে ঠিক ততটাই নীরব। প্রথমে তারা যুদ্ধবিরতিতেও ভেটো দিয়েছে। এই সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে রুখে দিয়ে ফিলিস্তিনের জনগণের মুক্তির লড়াইকে এগিয়ে নিতে হবে। অবিলম্বে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যা বন্ধ করতে হবে। জেরুজালেমকে রাজধানী ঘোষণা করে জাতিসংঘ স্বীকৃত স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লাকী আক্তারের সঞ্চালনায় সংহতি সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সিপিবির সভাপতি শাহ আলম, প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহীন রহমান, ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি আবু সাইদ, বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাকিল আক্তার প্রমুখ।