নির্বাচনের আগে বিচার ও সংস্কার

  • জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরির যে উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার নিয়েছে, তা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রকাশ করতে হবে।

  • শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা।

  • বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা।

  • সংস্কারের পর নির্বাচন করা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচিকে ঘিরে সারা দেশ থেকে আসা মানুষের ঢল। গতকাল রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেছবি: সাজিদ হোসেন

ঘটনাবহুল ২০২৪ সালের শেষ বিকেলে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাজারো ছাত্র-জনতার সম্মিলন ঘটেছিল। বিপুল এ সমাগমে মুহুর্মুহু স্লোগান ওঠে। শহীদ মিনার এলাকা কখনো উত্তাল হয় ‘এই মুহূর্তে দরকার, বিচার আর সংস্কার’ এমন স্লোগানে। কখনো স্লোগান ওঠে ‘জুলাইয়ের প্রেরণা, দিতে হবে ঘোষণা’।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির একটি আহ্বান বা কর্মসূচিকে ঘিরে সারা দেশ থেকে আসা মানুষের ঢল নামে শহীদ মিনার এলাকায়। এ কর্মসূচির নাম ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ (ঐক্যের জন্য যাত্রা)। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এ কর্মসূচি থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা মোটাদাগে চারটি দাবি সামনে এনেছেন। এর প্রথমটি হচ্ছে, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র তৈরির যে উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার নিয়েছে, তা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রকাশ করতে হবে।

দ্বিতীয় দাবি হলো, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা। তৃতীয় দাবি, বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা। চতুর্থ দাবি, সংস্কারের পর নির্বাচন করা।

মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচি ঘিরে গতকাল সকাল থেকেই ঢাকার বাইরে থেকে মানুষ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় আসতে শুরু করেন। দুপুর থেকে ঢাকার বিভিন্ন থানা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ এই আয়োজনে যোগ দেন। বেলা যত গড়ায়, লোকসমাগম তত বাড়তে থাকে। বেলা তিনটা নাগাদ নীলক্ষেত, পলাশী, দোয়েল চত্বর, চানখাঁরপুল ও শাহবাগের রাস্তাগুলো দিয়ে বিপুলসংখ্যক মানুষের ঢল গিয়ে মেশে শহীদ মিনারের মার্চ ফর ইউনিটির সমাবেশে।

সমাবেশের মঞ্চে ছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত ব্যক্তিরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন গত ৩ আগস্ট ঘোষিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক টিমের সমন্বয়ক ও সহসমন্বয়কেরা। মঞ্চে ঘোষণা দেওয়া হয়, ১৫৮ জন সমন্বয়ক ও সহসমন্বয়কের সবাই মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচিতে উপস্থিত রয়েছেন। মঞ্চে জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারাও ছিলেন। মঞ্চের পাশে একাধিক ডিজিটাল স্ক্রিন ছিল। সেখানে সমাবেশের কার্যক্রম সরাসরি প্রচার করা হচ্ছিল।

সমাবেশে আগতদের অনেকের হাতেই ছিল প্ল্যাকার্ড। এসব প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘টু জিরো টু ফোর, ফ্যাসিবাদ নো মোর’, কোনোটিতে ছিল ‘মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’, ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার; কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার’, ‘সারা বাংলা কারাগার, হাসিনা তুই স্বৈরাচার’ প্রভৃতি।

ঢাকার বাইরে থেকে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের বহনকারী কিছু বাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে রাখা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠেও কিছু গাড়ি রাখা হয়। সমাবেশের ছবি ও ভিডিও ধারণ করার জন্য শহীদ মিনারের আকাশে উড়ছিল ড্রোন।

এর আগে গত রোববার সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জানায়, ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ দেওয়া হবে। এ নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা তৈরি হয়। হঠাৎ ঘোষণাপত্রের বিষয়টি কেন সামনে আনা হলো, এর প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠে। ঘোষণাপত্রের পক্ষে-বিপক্ষে তর্কবিতর্কের পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিতে একধরনের উত্তাপ তৈরি হয়। এমন প্রেক্ষাপটে গত সোমবার রাত সোয়া ৯টার দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার সামনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের জরুরি ব্রিফিংয়ে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমতে৵র ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ অংশগ্রহণকারী সব শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্রটি প্রস্তুত করা হবে।

প্রেস উইংয়ের ব্রিফিংয়ের সাড়ে চার ঘণ্টা পর সোমবার রাত পৌনে দুইটার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জানায়, ৩১ ডিসেম্বর বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্চ ফর ইউনিটি নামের কর্মসূচি পালন করবে তারা।

এই শোক যাবে না

সমাবেশের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগে বেলা দুইটার পর থেকে বিগত আওয়ামী লীগ শাসনামলের গুম–খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, দুর্নীতি–লুটপাট নিয়ে নির্মিত একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়। বিকেল চারটা পর্যন্ত মঞ্চ থেকে ‘একটা একটা খুনি ধর, ধইরা ধইরা বিচার কর’, ‘ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা’সহ নানা স্লোগান দেওয়া হয়। তবে এ সমাবেশে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো বা ছাত্রসংগঠনের কোনো নেতাকে দেখা যায়নি।

জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয় ঠিক বিকেল চারটায়। প্রথমে বক্তব্য দেন শহীদ শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা মো. আবুল হাসান। তিনি বলেন, ‘আমাদের কান্না কখনো থামবে না, এই শোক কোনো দিনও যাবে না। আমাদের শহীদ পরিবারগুলোর একটাই দাবি, খুনি হাসিনাকে দেশে এনে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক। তাহলেই শহীদ পরিবারগুলো শান্তি পাবে।’

সরকারের উদ্দেশে আলভীর বাবা মো. আবুল হাসান বলেন, ‘আমরা বিচারের নামে প্রহসন দেখতে চাই না। আমাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করবেন না।’

আলভী ৪ আগস্ট মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়। সে নবম শ্রেণিতে পড়ত।

সমাবেশে বক্তব্য দেন শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর বাবা মীর মোস্তাফিজার রহমান। তিনি প্রশ্ন তোলেন, অভ্যুত্থানের তিন মাস পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কীভাবে নিরাপদে দেশ ত্যাগ করেন। জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের সবাইকে ‘বিপ্লবী যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে চেহারা বিকৃত হয়ে যায় খোকন চন্দ্র বর্মণের। তিনি সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার বিষয়টি ভালোভাবে তদারকি করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

আন্দোলনে আহত আতিকুল গাজী বলেন, ‘অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচনের জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছে। আমরা শুধু নির্বাচনের জন্য রক্ত দিইনি। আমরা সংস্কার চাই। সংস্কারের আগে কোনো নির্বাচন হবে না।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আওয়ামী লীগের শাসনামলে প্রায় দেড় বছর কারাবন্দী থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খাদিজাতুল কুবরা সমাবেশে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘সরকার পাল্টেছে, কিন্তু আমি এখনো বিচার পাইনি। আওয়ামী লীগের দোসররা খোলস পাল্টে শিবির ও বিএনপিতে যোগ দিচ্ছে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

অভ্যুত্থানের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ১৯ জুলাই দুবাইয়ে যে প্রবাসী শ্রমিকেরা আন্দোলন করেছিলেন, তাঁদের একজন শরীফ। সমাবেশ থেকে হাসিনা ও দোসরদের বিচারের দাবি জানান তিনি।

১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র জারির দাবি

গণ–অভ্যুত্থানের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের অনেকে সমাবেশে বক্তব্য দেন। বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে স্লোগান চলতে থাকে।

সমাবেশের সমাপনী বক্তা ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে অনেকে মেনে নিতে পারেনি। সে জন্য সচিবালয়, পুলিশ ও বিচার বিভাগে বিভিন্ন সময় আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলে। অতীতে ছিল সতীদাহ প্রথা, এখন আমরা দেখছি, নথিদাহ প্রথা। যারা সচিবালয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, আপনাদের বলতে চাই, আপনারা রিয়েলিটি (বাস্তবতা) মাইনা নেন।’

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে হাসনাত বলেন, সিন্ডিকেটের হাত ভেঙে দিতে হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। কোনো বিপ্লবীকে যদি আক্রমণ করা হয়, এই সরকারকে তার দায়ভার নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট-পরবর্তী বাংলাদেশে আমাদের আর কোনো শত্রু নেই। আমাদের একমাত্র শত্রু আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলো সংঘবদ্ধ থাকতে হবে।’

জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রের বিষয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র সরকারকে জারি করতে হবে। যারা ফ্যাসিবাদী ও সন্ত্রাসের রাষ্ট্র কায়েম করেছিল, তাদের বিপক্ষে লড়াই জারি থাকবে।

বক্তব্যের শেষ দিকে সবাইকে হাত তুলে লড়াই জারি রাখার শপথ নিতে আহ্বান জানান হাসনাত। সমাবেশে অংশ নেওয়া সবাই হাত তুলে সমর্থন জানানোর পর হাসনাত স্লোগান ধরেন, ‘এই মুহূর্তে দরকার, বিচার আর সংস্কার’। কিছুক্ষণ স্লোগান দেওয়ার পর হাসনাত সবার উদ্দেশে বলেন, ‘আবার দেখা হবে ১৫ জানুয়ারিতে আমাদের ঘোষণাপত্র নিয়ে।’

বিচারের আগে নির্বাচন নয়

হাসনাতের বক্তব্যের আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল বলেন, তাঁরা সবাইকে নিয়ে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ করবেন।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, আওয়ামী লীগের বিচারের আগে কোনো নির্বাচন হবে না। নব্বই বা একাত্তরের মতো আমরা চব্বিশকে ব্যর্থ হতে দেব না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য রিফাত রশীদ বলেন, দেশের অলিগলিতে আওয়ামী লীগের দালালেরা এখনো ঘাপটি মেরে আছে। তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে।

নির্বাহী সদস্য নুসরাত তাবাসসুম বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দালালমুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দ্রুত ছাত্র সংসদ নির্বাচন দাবি করেন তিনি।

বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান নির্বাহী কমিটির আরেক সদস্য মাহিন সরকার।

বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি

সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ন্যায্যতার ভিত্তি, মানুষের রক্তের কথা, চোখ হারানো ও অঙ্গহানির কথাগুলো অক্ষরে অক্ষরে লিখিতভাবে উল্লেখ না থাকলে সরকারের ঘোষণাপত্র মেনে নেওয়া হবে না। ঘোষণাপত্রের মধ্যে প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কারের ইঙ্গিত থাকতে হবে।

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, সরকারকে অতি দ্রুত ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপে সক্রিয় হতে হবে। সেটি না হলে চব্বিশের বাঘের বাচ্চারা আইন নিজেদের হাতে তুলে নেবে। একই সঙ্গে খুনের দায়ে আওয়ামী লীগকে একটি বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিষিদ্ধের প্রক্রিয়ায় যেতে হবে।

বিশ্বাসঘাতকতা করলে সমূলে উৎখাত

মানুষ নতুন সংবিধান প্রত্যাশা করে—এমনটি উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, নতুন সংবিধান নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই হবে। বাংলাদেশের আগামীর নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে যারা জয়ী হবে, তারা একই সঙ্গে সংবিধান বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে, নতুন সংবিধান প্রণয়ন করবে এবং আইনসভার সদস্য হিসেবে ভূমিকা পালন করবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, সরকার জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র করার উদ্যোগ নিয়েছে। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে সরকারকে এই ঘোষণাপত্র ঘোষণা করতে হবে।

জুলাই গণহত্যার বিচার, সিন্ডিকেট থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়া, পাচার করা অর্থ ফেরত আনা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে মানুষকে স্বস্তি দেওয়া এবং আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, সচিবালয়, পুলিশ বা যেকোনো জায়গায় বসে অভ্যুত্থানের স্পিরিটের (চেতনা) সঙ্গে কেউ বিন্দুমাত্র বিশ্বাসঘাতকতা করলে তাকে সমূলে উৎখাত করতে হবে।