নির্বাচনবিরোধী দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে ভারত আমাদের পাশে ছিল: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ভারতের নয়াদিল্লিতে বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। নয়াদিল্লি, ৮ ফেব্রুয়ারিছবি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, নির্বাচনবিরোধী দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে ভারত বাংলাদেশের পাশে ছিল, পাশে আছে। গত কয়েক দশকে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। একে আরও এগিয়ে নিতে দুই দেশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাবে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ভারতের নয়াদিল্লিতে বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের এক দশক’ শীর্ষক একক বক্তৃতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ফাউন্ডেশনের পরিচালক অরবিন্দ গুপ্তের পরিচালনায় এ অনুষ্ঠানে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশে ভারতের পূর্বতন হাইকমিশনার বীণা সিক্রি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কটি রক্তের বন্ধনের। অন্য যেকোনো দেশের সম্পর্কের সঙ্গে কখনোই বাংলাদেশের সম্পর্ককে এক করা যায় না। মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকারের অবদান বাংলাদেশ সব সময় কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করবে। প্রতিবছর প্রায় ১৭ লাখ বাংলাদেশি ভারতের ভিসার আবেদন করে। দিন দিন এই সংখ্যা বাড়ছে। এটি দুই দেশের পারস্পরিক সুসম্পর্কের পরিচয়ই বহন করে।
বক্তৃতা শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের মানুষের সম্পর্ক, আন্তুর্জাতিক প্রেক্ষিত, রাজনীতি, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে সেশনে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, চিন্তাবিদ, সাংবাদিক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের প্রশ্নের জবাব দেন।

এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে। মাঝে মাঝে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চায়, পারস্পরিক ভ্রাতৃত্বের সম্পর্কে চিড় ধরাতে চায়। সেসব অপচেষ্টাকে বর্তমান সরকার সব সময়ই প্রতিহত করে এসেছে।

ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাবে মতবিনিময়

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে ‘ফরেন করেসপন্ডেন্টস ক্লাব অব সাউথ এশিয়া’র সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
ক্লাবের প্রেসিডেন্ট এস ভেঙ্কট নারায়ণ ও সেক্রেটারি প্রকাশ নন্দের পরিচালনায় ক্লাব পরিচালনা পর্ষদ ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা মন্ত্রীর বক্তৃতার পর উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তরে অংশ নেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চা হয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এবারও আমাদের দেশে নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচন আমাদের দেশে একটি উৎসব। ৭ জানুয়ারি আমাদের দেশে উৎসবের আমেজে নির্বাচন হয়েছে।’

নির্বাচনের পর গতকাল পর্যন্ত ৫৭টি দেশ এবং জাতিসংঘসহ ২০টি আন্তর্জাতিক সংগঠন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নির্বাচিত সরকারকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতের মতো বাংলাদেশেও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হয়। কিন্তু বরাবরই বিএনপি ও জামায়াত একে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে। তারা জনগণকে ভোটদানে নিরুৎসাহিত করে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ সেসব অপচেষ্টা রুখে দেয়। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী, কিন্তু বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক রক্তের। অন্য যেকোনো দেশের সম্পর্কের সঙ্গে কখনোই বাংলাদেশের সম্পর্ককে তুলনা করা যায় না। তবে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের অগ্রগতি বজায় রাখতে প্রতিবেশী সব রাষ্ট্রের সঙ্গেই সদ্ভাব বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।