ব্যানারে ঢেকেছে সমাবেশ মঞ্চ, আ.লীগ নেতাদের হুমকিতেও সরানো হচ্ছে না

আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে এভাবে বিভিন্ন এলাকার নেতাদের আনা ব্যানারে ঢাকা পড়েছে মঞ্চ, নেতারা বারবার বললেও এসব ব্যানার সরানো হচ্ছে নাছবি: আনোয়ার হোসেন

আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে ব্যানার নামানোর আহ্বান জানিয়ে হয়রান হচ্ছেন নেতারা। কিন্তু তাতে কান দিতে নারাজ ব্যানার নিয়ে আসা নেতারা। ব্যানার নামানো নিয়ে হুমকি দিয়ে নেতারা বলছেন, ‘বহিষ্কার করব।’ এমনকি বলতে বলতে হতাশ হয়ে কেউ কেউ বলছেন, ‘কেউ কথা শোনে না...’

আজ বুধবার রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটের সামনের শান্তি সমাবেশে এমন ঘটনা ঘটে। কেউ ব্যানারে নিজ নিজ নেতার ছবি দিয়ে উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন, কারও চাওয়া মনোনয়ন, কেউ কেউ ওয়ার্ড-থানার নেতা হওয়ার বাসনা লিখেছেন ব্যানারে। নেতা–কর্মীদের এসব ব্যানারে ঘিরে যায় সমাবেশ মঞ্চের সামনের পুরো অংশ।

এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা সবার বক্তব্যে বলছেন ব্যানার নামানোর কথা। বারবার বললেও কেউ কথা শোনে না। ব্যানার না নামালে রাজনীতি শিখিয়ে দেব—এমন হুমকিও দিয়েছেন এক নেতা। এর আগেও সমাবেশে ব্যানার নামানো নিয়ে নেতাদের কাকুতি–মিনতি করতে দেখা গেছে। ব্যানার না নামালে বক্তব্য না দিয়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

আজ বেলা পৌনে দুইটা থেকে ঢাকা ও এর আশপাশের জেলা থেকে জেলা আওয়ামী লীগ, মহানগর আওয়ামী লীগ, বিভিন্ন থানা–ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসেন। প্রতিটি মিছিলে একাধিক ব্যানার দেখা যায়। কেউ কেউ ব্যানার পেছনে রেখে ছবিও তোলেন।

বেলা তিনটার দিকে সমাবেশ শুরু হলে মঞ্চে আসতে শুরু করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। সভা শুরু হওয়ার পর থেকে মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ব্যানার নামানোর কথা বলে আসছেন।

সমাবেশে বক্তব্যে এ নিয়ে কথা বলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেন, ‘আপনারা ব্যানারগুলো নামান, আজকের এই সমাবেশ বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেট থেকে নগর ভবন পর্যন্ত বিস্তৃত। আমাদের নেতারা সামনে কিছু দেখতে পাচ্ছেন না। আপনারা ব্যনারগুলো নামিয়ে ফেলুন। দয়া করে ব্যনারগুলো নামিয়ে ফেলুন। আমার সামনে আমার ছবি দিয়ে যাঁরা ব্যানার করেছেন, তাঁরা শিগগিরই নামান।’

এর আগে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, ‘আপনারা মঞ্চকে ব্যানার দিয়ে ঢেকে ফেলেছেন, আপনারা ব্যানার নামিয়ে ফেলুন।’

পরে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম মাইকের সামনে গিয়ে বহিষ্কারসহ ‘রাজনীতি শিখিয়ে দেব’ বলে হুমকি দিলেও কোনো কাজে আসেনি।

মির্জা আজম বলেন, ‘এতবার নেতারা বলছেন, তারপরও ব্যানার নামাচ্ছেন না, আপনাদের খবর আছে।’ তিনি বলেন, ‘যাঁরা ব্যানার নামাচ্ছেন না, তাঁদের খবর আছে, তালিকা করে বহিষ্কার করব, রাজনীতি শিখিয়ে দেব। ব্যানার নামান।’

এরপরে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, ‘আজকে আমাদের শান্তি সমাবেশ, ব্যানারগুলো গুটিয়ে ফেলুন, ব্যানার গুটান। কেউ কথা শোনে না...সাংগঠনিক সম্পাদক বলেছেন বহিষ্কার করবে, তবু কেউ কথা শোনে না।’